বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রায় দেড় বছর পর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী ঠাঁই হয়নি গাজীপুরের বহুল আলাোচিত সাবেক মেয়র ও মহানগার আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের।
তবে এ নিয়ে তাঁর কোনাে আক্ষেপ নেই। বললেন, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে করা এ কমিটিতে তিনি ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আজমত উল্লা খানকে সভাপতি ও আতাউল্লাহ মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
দুই সদস্যের এ কমিটিই দেড় বছর পর ৭৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে জমা দেয়। মঙ্গলবার এ কমিটি অনুমােদন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরের অনুসারীরা বলছেন, রাজনীতি থেকে বিদায় করার জন্যই তাঁকে কমিটিতেত স্থান দেওয়া হয়নি। ষড়যন্ত্র করে তাঁকে দল থেকেও বহিস্কার করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। প্রতিদ্বন্দ্বী আজমত উল্লা খানের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীর একাংশের দীর্ঘ আন্দোলনের পর দল থেকে তাঁকে প্রথমবার বহিস্কার করা হয়। এর পর জাহাঙ্গীরকে হারাতে হয় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদটিও। ক্ষমা চেয়ে সেই সময় দলে ফিরেছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে গত সিটি করপােরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিপক্ষে জাহাঙ্গীর তাঁর মা জায়েদা খাতুনকে প্রার্থী করে দ্বিতীয়বার দল থেকে বহিন্কৃত হন। জায়েদা খাতুনের কাছে বিপুল ভােটের ব্যবধানে পরাজিত হয় আজমত উল্লা। এবারও ক্ষমা ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে জাহাঙ্গীরকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়নি বলে মনে করছেন তাঁর অনুগত কর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে হত্যা মমলার আসামিকে স্থান দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে যারা দলকে লালন-পালন করেছেন, তাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। টাকা লেনদেনের বিনিময়ে এ কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে জানতে আজমত উল্লা খানের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল বলেছেন, সবাইকে তো আর কমিটিতে স্থান দেওয়া সম্ভব নয়। প্রস্তাবিত কমিটিতে জাহাঙ্গীরের নাম নেই দেখেও তাে দলের সাধারণ সম্পাদক কিছু বলেননি। তিনি বললে আমরা তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করে পুনরায় জমা দিতাম। আতাউল্লাহ মগুল জানান, এ কমিটির মেয়াদ হবে অনুমােদন লাভের দিন থেকে পরবর্তী তিন বেগম সামসুন নাহার ভুইয়া, মতিউর রহমান মতি, আব্দুল হাদী শামীম, রেজাউল করিম ভুইয়া, জয়নাল আবেদীন, ওসমান আলী, আসাদুর রহমান কিরণ, সফর উদ্দিন খান, শেখ মাে, আসাদু্লাহ, হেদায়েতুল ইসলাম ও আব্দুল আলীমকে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আফজাল হােসেন এম নাসির উদ্দিন নাসির। আইনবিষয়ক সম্পাদ আ্যাডভােকেট মো. খালেদ হােসেন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক নাসির উদ্দিন মােল্লাহ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ফজলুর রহমান, ত্রাণ ও সমজকল্যাণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মাহফুজুর রহমান রাসেল, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা সম্পাদক আবদুল হালিম সরকার, বন ও পরিবেশ সম্পাদক সাইজ উদ্দিন মােল্লাহ, বিজ্ঞান ও প্রযুত্তি সম্পাদক শহীদ উল্লাহ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হােসনে আরা জুলি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযােদ্ধা মাে, খালেকুজ্ঞামান, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হীরা সরকার, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক আনিসুর রহমান, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক বাছির উদ্দিন ও শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সােলায়মান মিয়া। এ কমিটিতে গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলকে সাংস্কৃতিকবষয়ক সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন জাকির হােসেন খােকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান, এস এম আলতাব হােসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন মপ্তল, উপদপ্তর সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম দীপ এবং উপপ্রচার সম্পাদক সালমা বেগম। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে করা হয়েছে কোষাধ্যক্ষ। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ,ক,ম, মােজাম্মেল হক, সাবেক প্রতিমন্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও মেহের আফরােজ চুমকিকে দেওয়া হয়েছে সদস্য পদ।