সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়াঃ কুষ্টিয়ায় বিএনপির কর্মী সুজন মালিথা (৪৫) হত্যা মামলায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার সাবেক এমপি আব্দুর রউফের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে কুষ্টিয়া সদর আমলি আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করেন। রউফের আইনজীবী জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কুষ্টিয়া সদর আদালতের জিআরও ইস্কেন্দার এই তথ্য জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে আব্দুর রউফকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন গতকাল বুধবার সকালে তাঁকে ঢাকার গোয়েন্দা শাখায় হস্তান্তর করা হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সুজন মালিথা নামের এক বিএনপি কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পাঁচ বছর পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর দলীয় ভাই পরিচয় দিয়ে সুজন হোসেন নামের এক ব্যক্তি কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাত, মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
মামলায় কুষ্টিয়া–৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক এমপি আব্দুর রউফকে আট নম্বর আসামি করা হয়েছে। আব্দুর রউফ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সুজন মালিথা বিএনপির প্রোগ্রাম শেষে রাতে বাড়ি ফেরেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আসামিরা তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। রাত দেড়টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার মোল্লাতেঘরিয়া পূর্ব ক্যানালের পাড়ে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সুজন সদর থানার টাকিমারা এলাকার ইসমাইল মালিথার ছেলে।
আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা করতে বাধা দেওয়ায় ঘটনার পাঁচ বছর পর মামলা করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী সুজন হোসেন। তিনি কুষ্টিয়ার লালন শাহ সড়ক এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুজ্জামান বলেন, ‘শুনানির জন্য আদেশ পেলে তখন আমরা আদালতে যাই। তা ছাড়া কোনো রিমান্ড আবেদনও করা হয়নি।’
তবে সাবেক এমপি আব্দুর রউফের স্ত্রী জান্নাতুন নাহার বলেন, ‘আমার স্বামী একজন জনদরদি মানুষ। ঘটনার পাঁচ বছর পর মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।’