মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার বদরপুর গ্রামের আদম দালাল, প্রতারক, মানব পাচার,অর্থ আত্মসৎকারী বাবুল হাওলাদার ও কুদ্দুস হাওলাদার এর গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
সোমবার ( ২১ অক্টোবর) সকাল আনুমানিক ৯টায় দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের চরবৌডুবা বাজারে
এই মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, সুখের আশায় বাড়ির গরু ছাগল, বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ ও আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে ভালো চাকরির প্রলোভনে পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি আরব। কিন্তু সৌদি গিয়ে জানতে পারেন আদম ব্যবসায়ী তাদেরকে তিন মাসের ট্যুরিস্ট ভিসায় সেখানে পাঠিয়েছে। দালালের খপ্পরে পড়ে এভাবেই নিঃস্ব হয়েছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ১২ নং দড়ির চর খাজুরিয়া ইউনিয়নের চরবৌডুবা গ্রামের ২৩ পরিবার।
সৌদিতে থাকা অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপনের বর্ণনা দিতে গিয়ে দেশে ফেরা ভুক্তভোগীরা বলেন, ২-৩মাস বন্দি অবস্থায় ছিলাম। মানুষের এঁটো খাওয়ার খেয়েছি। কোনো কোনো দিন শুধু পানি খেয়ে ছিলাম। পরে পুলিশ আমাদের ১২ জনকে আটক করে দেশে পাঠিয়ে দেয়।
বাকী ১১ জনে নেই কোন খোঁজ খবর।
দেশে ফিরে দালাল বাবুল হাওলাদার (ওরফে বাবলু), কুদ্দুস হাওলাদার এবং সিফাতের বিচার চেয়ে সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করেছেন বলে জানান তারা ।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের না পাওয়ায় সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে ভুক্তভোগীরা জানান স্থানীয় আদম ব্যবসায়ী বাবুল হাওলাদার ও কুদ্দুস হালাদার এর মাধ্যমে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা দিয়ে তাদের সন্তানদের সৌদিতে পাঠিয়েছেন। কথা ছিল ৫ বছরের জন্য তাদের নিজস্ব কোম্পানিতে কাজ দিবে। আকামা করিয়ে দিবে কিন্তু তাদেরকে দেওয়া হয়েছে ৩ মাসের জন্য অন্য কোম্পানিতে চাকরি। এখন টাকা ফেরত চাইলে ভয়ভীতি দেখায় বাবলু ও তার লোকজন।
এ জন্য প্রতারক আদম দালাল চক্রের সদস্য বাবুল হাওলাদার ও কুদ্দুস হাওলাদার এর বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে নেমেছে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
বিভিন্ন অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, বেশি বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত পরিবারের বেকার যুবক ও দিন মজুরদের বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছে স্থানীয় কিছু আদম ব্যবসায়ী ও কতিপয় দালাল। এক্ষেত্রে বিদেশগামী শ্রমিকের বেশিরভাগই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, শ্রমিকদের কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় দালালরা। প্রথমে দীর্ঘ মেয়াদি প্রবাসে কোম্পানিতে কাজ করার কথা বললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্যুরিস্ট ভিসায় পাঠিয়ে প্রতারণা করছে তারা। এদের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরছেন এসব শ্রমিকরা। দেশে ফিরে নিজেদের সঙ্গে হওয়া প্রতারণার বিচার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও কাজে আসছেনা।