1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছি, দেখা হবে আদালতে: ব্যারিস্টার সুমন বিনোদবাড়ি আইডিয়াল কলেজের অভিভাবক সমাবেশ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত মাদকসক্তি নিরাময় কেন্দ্র না টর্চার সেল কলারোয়া চন্দনপুর ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বোর্ডির মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় সময় টিভির সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাতক্ষীরায় এইচপিভি টিকাদান সম্পর্কে অবহিতকরণ সভা মেহেন্দিগঞ্জে আদম দালালের খপ্পরে পরে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা ২৩ পরিবারের মানববন্ধন সুরভী আক্তার মালা কথায় ফজলুর রহমান বাবু গাইলেন” বাবা” মুন্সীগঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে স্বর্গরাজ্য বেপরোয়া সিন্ডিকেট ইয়াবা বানিজ্য পঞ্চগড়ে চাচাত ভাইকে হত্যার দায়ে তিন জনের মৃত্যুদন্ড

রংপুরে প্রতিবন্ধী পত্রিকা বিক্রেতার পাশে এস.পি বিপ্লব কুমার সরকার

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৩ আগস্ট, ২০২১
  • ১৩৭ ০৫ বার পঠিত

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর জেলা প্রতিনিধি -ঃ রংপুর মহানগরীর প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক পত্রিকা হকারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) বিপ্লব কুমার সরকার। আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সহায়তার অর্থ প্রতিবন্ধী হাতে তুলে দেন তিনি। এসময় জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আর্থিক সহায়তা প্রাপ্ত পত্রিকা হকার জাহাঙ্গীর হোসেন জন্মের পর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী।তার বয়স চল্লিশের কোঠায়।সংসারে মা আছেন, বাবা নেই। এক সময় বিয়ে করেছিল সে। কিন্তু অভাবের সংসার ছেড়ে তার স্ত্রী চলে গেছে। আগে মানুষের কাছে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করত জাহাঙ্গীর। হঠাৎ উপলব্ধি হয় ভিক্ষা করার চেয়ে না খেয়ে মরা ভালো। এরপর নেমে পড়েন বিকল্প কাজের সন্ধানে।শুরু করেন পত্রিকা বিলির (হকার) কাজ। রংপুর প্রেসক্লাব চত্বর থেকে পত্রিকা এজেন্টদের কাছ থেকে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা কিনে তা জাহাজ কোম্পানি মোড়, পায়রা চত্ত্বর, টাউন হল, ডিসির মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে বিক্রি করেন। এভাবে জাহাঙ্গীরের হাত থেকে মানুষের হাতে পৌঁছে যায় দেশ বিদেশের খবর। প্রথমে লোকজন একটু অবজ্ঞার চোখে দেখলেও ধীরে ধীরে জাহাঙ্গীর সকলের প্রিয় পত্রিকার হকার হয়ে উঠেন। পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হতো, তা দিয়ে দিব্যি চলে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরের দিনগুলি। হঠাৎ অতিমারী করোনার কষাঘাতে এলোমেলো হয় জাহাঙ্গীরের জীবন যাপন। লকডাউনে বন্ধ হয় দোকান-পাট, শহরে কমে মানুষের আনাগোনা। জাহাঙ্গীরের বেচাকেনাও কমে যায়। একসময় হাতের জমানো টাকা ফুরিয়ে আসে। কিন্তু তাতে হাল ছাড়েনি জাহাঙ্গীর। লকডাউন শিথিল হলে আবারও পত্রিকা হাতে নেমে পড়েন।পত্রিকার সঙ্গে করোনা ঝুঁকি রোধে অতিজরুরি মাস্কও বিক্রি করেন ।
জাহাঙ্গীর চলাফেরা অন্য আট-দশজনের মতো নয়। জরাজীর্ণ কাপড়, বিবর্ণ চেহারার জাহাঙ্গীর পত্রিকা নিয়ে কারও সামনে আসলে অনেকেই ভিক্ষুক ভেবে টাকা হাতে দেয়। কিন্তু সে বিস্মিত হেসে সকলকেই বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দেয়। পত্রিকার মূল্য ছাড়া কারও কাছ থেকে ভিক্ষার টাকা নেন না। প্রতিবন্ধী হলেও জাহাঙ্গীর ভিক্ষা করতে চায় না। বরং শত অভাবের মাঝেও মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়। এই লড়াকু গল্প শুনে জাহাঙ্গীরকে ডেকে নেন রংপুরের জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার। এসময় পুলিশ সুপার প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর তার লড়াকু জীবনের গল্প তুলে ধরেন। দুঃখভরা অসহায় তার গল্প শুনে অভিভূত হন। জাহাঙ্গীরের বর্তমান অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থার খোঁজ নেন তিনি।জাহাঙ্গীর তার পুঁজি হারিয়ে এখন আর আগের মতো পত্রিকা কিনে বিক্রি করতে পারছেন না। তাছাড়া অর্থের অভাবে সে ও তার মা খাদ্য ও বস্ত্র সংকটে আছে। সব শুনে প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীরকে পত্রিকা বিলির ব্যবসা ও তার মায়ের খাদ্য-বস্ত্র কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা তুলে দেন এসপি বিপ্লব কুমার সরকার। এসময় আনন্দে আত্মহারা হয়ে কেঁদে ফেলেন প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর।
রংপুরের এসপি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি মানুষের পরিচয় হতে পারে না। কর্মই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়। জাহাঙ্গীর প্রতিবন্ধী হয়েও ভিক্ষা না করে সাহসী এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এমন মানুষের পাশে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। সবাই যদি জাহাঙ্গীরের মত চিন্তা করে ভিক্ষার জন্য হাত না বাড়িয়ে কিছু করার চেষ্টা করতে থাকে। দেশ একদিন সত্যিকারের ভিক্ষুক মুক্ত হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ