1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পঞ্চগড়ে ফ্রি ওয়াই ফাই জোনের উদ্বোধন তারুণ্য উৎসবে পঞ্চগড়ে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ  দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত পঞ্চগড়ে ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলা ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপন রংপুর রেঞ্জের ও পুলিশ সুপার সহ ৪ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা আটক পঞ্চগড়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা সম্মেলনে সভাপতি আব্দুল হাই, সেক্রেটারি সৈয়দ সুলতান মাহমুদ পঞ্চগড়ে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ পঞ্চগড়ে জুলাই-আগস্টে বিপ্লবের গণহত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ ও ম্মারকলিপি প্রদান পঞ্চগড়ে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত ২০২৫ পঞ্চগড়ে চিকিৎসক পদায়ন সহ ৯ দফা দাবিতে অনশনে. ডিসির আশ্বাসে অনশন প্রত্যাহার।

আজ (১০ডিসেম্বর) নড়াইল ও কালিয়া মুক্ত দিবস

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৩৩ ০৫ বার পঠিত

মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী, নড়াইল প্রতিনিধি -ঃ ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিপাগল দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করে নড়াইল ও কালিয়াকে মুক্ত করে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল নড়াইল ও কালিয়ার মুক্তিপাগল জনতা। নড়াইলের এসডিও’র বাসভবনকে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের সদর দপ্তর স্থাপিত হয়।

৭মার্চ কালিয়ার শেখ আব্দুস সালামের নেতৃত্বে স্কুল প্রাঙ্গণে পাকিসহানী পতাকা পুড়িয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। তার পুর্বে আব্দুস সালামকে আহবায়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট কালিয়া থানা ‘স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদ’ কমিটি গঠন করা হয়। ওই সময় নড়াইলের জামায়াত নেতা পিস কমিটির সভাপতি মওলানা সোলায়মানের নেতৃত্বে ‘শান্তিবাহিনী গঠিত হয়’। তার একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন কালিয়ার ইসলামপুর গ্রামের শেখ তবিবর রহমান মাষ্টার। তাদের নির্দেশে শতশত মুক্তিকামী মানুষকে ধরে এনে জবাই করে হত্যা করে।

৯ ডিসেম্বর নড়াইল শহরকে হানাদার মুক্ত করার জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী নড়াইলের কমান্তার উজির আহম্মেদ খানের নেতৃত্বে চতুর দিক থেকে ফজলুর রহমান জিন্নাহ, আনোয়ারুজ্জামান, শেখ আজিবর রহমান, শরীফ হুমায়ুন কবীর, সেলিম, হিলু, রানা, আমির হোসেনসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালান। তখন পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর ও মতিয়ার রহমান শহীদ হন।

এ সময় মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা চারিদিক থেকে প্রচন্ড গোলাবর্ষণ শুরু করলে পাক-বাহিনী আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। অতঃপর ১০ ডিসেম্বর নড়াইল পাক হানাদার মুক্ত হয়। এছাড়া একই দিনে (১০ ডিসেম্বর) কালিয়াকে পাক হানাদার মুক্ত করতে কমান্ডার আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ডেপুটি কমান্ডার ওমর আলী, মোল্যা ইমদাদুল হক, এসএম হারুনুর রশীদ, হেমায়েত মুন্সী, শহীদ চৌধুরী, শাহাজাহান বিশ্বাস, মাকলুকার চৌধুরী, সুবেদার মোশারেফ হোসেন টুকু, মোল্যা মনিরুজ্জামান, সৈয়দ সরাফ আলী, হাফিজুর রহমান, একরামূল হক টুকু, সাজ্জাদ হোসেন মোল্যা, সুলতান কাজী, মো. আনোয়ার হোসেন মোল্যা , মতিয়ার রহমান , শাহাদত হোসেন সহ প্রায় ২শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। ১০ ডিসেম্বর কালিয়া হানাদার মুক্ত হয় ।

এসময় মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা চতুদিক থেকে প্রচন্ড গোলাবর্ষন শুরু করলে পাক মিলিটারিরা আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। এখানে একজন পাক মিলিটারি নিহত হয় এবং অন্যদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। শীতের রাতে প্রবল শীতকে উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা সারা রাত শহরে বিজয় উল্লাস করতে থাকেন ও জয় বাংলা শ্লোগানে শ্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে তোলেন এবং ১০ ডিসেম্বর দুপুর একটা ১৫ মিনিটে নড়াইলকে পাক হানাদার মুক্ত ঘোষনা করা হয়।

নড়াইল জেলাটিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যাধিক্যে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা হিসেবে পরিচিত। এ জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা প্রায় ২০০০। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং নড়াইল জেলার মুক্তিযুদ্ধে যাদের ব্যাপক অবদান রয়েছে তাদের নাম নিম্নে উল্লেখকরা হলো।

মুক্তিযুদ্ধে যারা কমান্ডার ছিলেন
১। লেফটেন্যান্ট কমল সিদ্দিকী, সাব-সেক্টর কমান্ডার
২। মরহুম মোঃ জাহিদুর রহমান, মুজিব বাহিনী প্রধান, নড়াইল
৩। মোঃ মাহামুদুল হক মোক্তার, থানা কমান্ডার (এফ এফ), লোহাগড়া
৪। জনাব শরীফ খসরুজ্জামান, কমান্ডার, থানা মুজিব বাহিনী, লোহাগড়া
৫। শরীফ হুমায়ুন কবীর, কমান্ডার, থানা মুজিব বাহিনী, নড়াইল সদর, নড়াইল
৬। এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, গ্রুপ কমান্ডার, কালিয়া
৭। এ্যাড. এস এম ফজলুর রহমান জিন্নাহ, ডেমুলেশন কমান্ডার, নড়াইল
৮। জনাব সাইফুর রহমান হিলু, গ্রুপ কমান্ডার, বিএলএফ, নড়াইল
৯। জনাব মোল্লা শামসুর রহমান, টুআইসি, আর্টিলারী
১০। প্রফেসর উজির আহমেদ, থানা কমান্ডার (এফএফ), নড়াইল
১১। আঃ হাই বিশ্বাস, জেলা কমান্ডার, (এফ এফ), নড়াইল।
১২। মোঃ নজরুল ইসলাম (বিমান বাহিনী)
১৩। মরহুম ওমর ফারুক, থানা কমান্ডার (এফএফ), কালিয়া
১৪। জনাব আব্দুল মজিদ, থানা কমান্ডার, মুজিব বাহিনী, কালিয়া
১৫। জনাব গোলাম কবীর, ডেপুটি কমান্ডার (এফ এফ), লোহাগড়া
১৬। জনাব মোঃ আমীর হোসেন, গ্রুপ কমানন্ডার (এফএফ), কালিয়া
১৭। জনাব মোঃ লুৎফর রহমান বিশ্বাস, গ্রুপ কমান্ডার (এফ এফ), লোহাগড়া
১৮। মুন্সি আব্দুল হালিম, ডেপুটি কমান্ডার, বিএলএফ, নড়াইল
১৯। জনাব খায়রুজ্জামান, গ্রুপ কমান্ডার, কালিয়া
২০। জনাব নজির হোসেন, গ্রুপ কমান্ডার (এফএফ)

মুক্তিযুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন
১। খন্দকার আঃ হাফিজ, এম,এল,এ, নড়াইল
২। মরহুম এখলাস উদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক এমপি, কালিয়া
৩। মরহুম লেঃ (অবঃ) মোঃ মতিয়ার রহমান, লোহাগড়া
৪। জনাব কামাল উদ্দিন সিদ্দীকি, সাবেক মহকুমা প্রশাসক, নড়াইল
৫। জনাব প্রফেসর নূর মোহাম্মদ, লোহাগড়া, নড়াইল
৬। বি,এমমতিয়ার রহমান, নড়াইল সদর, নড়াইল
৭। সৈয়দ শামছুল আলম গোরা, নড়াইল সদর
৮। সিকদার মতিয়ার রহমান, নড়াইল সদর, নড়াইল
৯।শহীদ মাস্টার আঃ সালাম, নড়াইল
১০। এ্যাড. সরদার আঃ সাত্তার, নড়াইল
১১। অধ্যক্ষ শ ম আনোয়ারুজ্জামান, লোহাগড়া, নড়াইল
১২। মরহুম এ্যাড. গাজী আলী করিম, নড়াইল
১৩। মরহুম এ্যাড. সাইদুজ্জামান, নড়াইল
১৪। জিন্দার আলী খান, কালিয়া , নড়াইল

খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার
১। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ, মহিষখোলা, নড়াইল
২। বীর উত্তম সুবেদার মজিবর রহমান, মলি­কপুর, লোহাগড়া, নড়াইল
৩। বীর বিক্রম ক্যাপ্টেন আফজাল হোসেন, ধোপাদাহ, লোহাগড়া, নড়াইল
৪। বীর বিক্রম, মোঃ মতিয়ার রহমান, সদর, নড়াইল
৫। বীর প্রতীক মতিয়ার রহমান, সদর, নড়াইল
৬। বীর প্রতীক গোলাম আজাদ, ইত্না, লোহাগড়া, নড়াইল
৭। বীর প্রতীক খোরশেদ আলিম, কালিয়া ,নড়াইল।

পরে ১৪ ডিসেম্বর এ সেক্টরের মেজর মঞ্জুর নড়াইলে আসেন এবং মুক্তি পাগল হাজারো জনতার উপস্থিতিতে ডাকবাংলা প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ