সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়াঃ সপ্তাহ ব্যবধানে কুষ্টিয়ার বাজারে কমতে শুরু করেছে শাক-সবজি ও ডিমের দাম। তবে বাজারে এখনও উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছ ও মুরগির দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজি। দোকানগুলোতে শীতের সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে কমতে শুরু করেছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতা।
বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের তুলনায় শাক-সবজির দাম কিছুটা কমেছে। সামনে কোনো সংকট না হলে দাম হাতের নাগালে চলে আসবে।
কুষ্টিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির বাজারদর ঊর্ধ্বমুখী হলেও কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। সেই সাথে অপরিবর্তিত রয়েছে আলু, পেঁয়াজ আর রসুনের দাম। বাজারে নতুন আসা সবজির মধ্যে সিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজিতে। টমেটোর কেজি ২২০ টাকা, বরবটি আটি ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পটোল ৬০ টাকা এবং করলা ৮০ টাকা কেজি আর শসা ও পাতাকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। এদিকে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চললেও চাষের মাছের সরবরাহ থাকায় মাছের বাজারদর বাড়েনি।
যদিও মুরগির মাংসের বেলায় কোথাও কোথাও কেজি প্রতি দশ থেকে ১৫ টাকা আর গরু ও খাসির মাংসে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা। খাইরুল নামে এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজ, রসুন, আদা বা আলুর দামে কোনো পরিবর্তন নেই। আর দাম কমার কথা শুনলেও ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা হালিতেই ডিম স্থান ভেদে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
সুমী ঘোষ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, গত একমাসে সবকিছুর যে দর বেড়েছে, তার অনেকটাই কমতে শুরু করেছে। তবে কমে আগের দামের কাছাকাছিও যায়নি। আবার শীতের সবজি আশা শুরু করলেও তার দাম আকাঁশচুম্বি। এ নিয়ে ক্রেতারা বলছেন, তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে পারছেন না তারা। বাজার তদারকি নামমাত্র না করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তোলেন ক্রেতারা।
যদিও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে বিভিন্ন বাজারে মনিটরিং চালানো হচ্ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, মনিটরিংয়ের সময় আর বাজার জমে ওঠার সময় আলাদা হওয়ায় এর সুফল নেই। মোতালেব নামে এক দিনমজুর বলেন, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন বাজারে সকাল ৬টা থেকে ৯টা আর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে বেচাবিক্রির ধুম পড়ে। কিন্তু অভিযান চালানো হয় অফিসিয়াল টাইম সকাল ১০টা নয়তো ১১টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে। তখন তো বাজারে ক্রেতা থাকে না, ফলে বাড়তি দামে পণ্য বিক্রির বিষয়টি তেমন ভাবে উঠেও আসে না।
সুখবর নেই আলু-পেঁয়াজের বাজারেও। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৩৫ টাকা, আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। নতুন পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত বাজার একটু চড়া থাকবে।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।
আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।