1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পঞ্চগড়ে ৫ নারীকে জয়িতা সম্মাননা প্রদান পঞ্চগড়ে ঘোড় দৌড় দেখতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়! উৎসবে মাতলো হাজারো মানুষ পঞ্চগড়ে জাগপা’র বিক্ষোভ মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ পঞ্চগড়ে স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রিজের কমিটি গঠন রতনীবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নির্বাচনে উল্লখ যোগ্য ৬ পদে নির্বাচিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পঞ্চগড়ে সাবেক রেলমন্ত্রীর জামিন না মঞ্জুর পঞ্চগড়ে আল ইহসান হজ গ্রুপ ও স্কুল অফ দা হলি কুরআন আয়োজিত প্যারেন্টিং প্রশিক্ষণ পঞ্চগড়ে যথাযথ মর্যাদায় হানাদার মুক্ত দিবস উদযাপিত পঞ্চগড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ জুলাই আগষ্ট অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের স্মৃতি নিয়ে স্মরণ সভা

নীলফামারীতে নারীদের  তৈরি হোগলাপাতার হস্তশিল্পের পর্ণ ইউরোপ – আমেরিকা সহ যাচ্ছে বিশ্বের ২৮ টি দেশে

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২৯ ০৫ বার পঠিত

তপন দাস, নীলফামারীঃ ঘরের  কাজ শেষে  অবসর সময়  বসে না থেকে  দারিদ্র্যতাকে দুর করতে  এবং অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে  বার্তি আয়ের আশায় এবং  পরিবারের হালধরার লক্ষ্যে     হোগলাপাতা তৈরি করেছে  ভিন্ন ভিন্ন রকমের  হস্তশিল্পের কাজ। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে  ইউরোপ – আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন ২৮ টি দেশে। হোগলাপাতার এই ভিন্ন রকমের  হস্ত শিল্প তৈরি হচ্ছে  নীলফামারী সদর উপজেলা  ১০ কিলোমিটার উত্তরে  খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে  তাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছে এই ইউনিয়নের নারীরা।  সংসারের  কাজের ফাকে এই কারুশিল্পের কাজ করার সুযোগ  থাকায় গ্রামের  অধিকাংশ নারী  ঐতিহ্যবাহী  কুটির এই শিল্পের সঙ্গে  নিজদের সম্পৃক্ত করে  আজ হয়েছে  তারা স্বাবলম্বী। আর এই হোগলাপাতার রয়েছে  বিভিন্ন ধরনের নাম, বাংলায় হোগলা, হোগলাপাতা ও ধারীপাতা নামে  পরিচিত  হলেও ইংরেজিতে এই হোগলাপাতাকে ক্যাট টেইল বা বিড়ালের লেজ ও বলা হয় । এই হোগলা পাতা সাধারণত ৫ থেকে ১২ ফিট উচ্চতার হয়ে থাকে। এই পাতাকে রোদে শুকিয়ে বিশেষ কায়দায় পাতাটিকে পেচিয়ে প্রথমে দড়ি বানানো হয় , পরে সেই হোগলাপাতাকে আড়াআড়ি করে ঐ দড়ি দিয়ে পেচিয়ে  তৈরি  করা হয়  পছন্দের  বিভিন্ন ধরনের কারুপণ্যের জিনিস। মাপ,  সাইজ এবং  বিভিন্ন ডিজাইনের জন্য  প্রথমে লোহা  ও জিআই তার দিয়ে তৈরি করা হয়  ডাইস । হোগলা পাতা  সহ  এই কারুশিল্পের কাজেট বিভিন্ন  উপকরণ  কারিগরদের কাছে পৌঁনছাতে কাজ কারখানা। এরপর কারিগরদেরকে পর্ণ্য তৈরি করার জন্য  দেয়া হয়  নির্দিষ্ট সময় । পণ্য তৈরি হলে কারখানা থেকে কর্মী এসে নারীদের কাছ থেকে  পণ্য সংগ্রহ করে । প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে তৈরি করা  কারুশিল্প পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বৈদেশিক বাজারে  এর চাহিদা ও বেশি । আর এখানকার নারীদের হাতে তৈরি করা কারুপণ্য সরবরাহকারীদের হাত হয়ে চলে যায়  আমেরিকা, কানাডা, চীন, জাপান, জার্মানি,  অষ্ট্রেলিয়া জর্ডান সহ বিশ্বের প্রায়  ২৮ টি দেশে । কলেজে পড়াশোনা করার পাশাপাশি  হোগলা পাতার পণ্য তৈরি করা   জান্নাতুল মাওয়া লিজা বলেন পড়াশোনা করার পাশাপাশি  অবসর সময়ে বসে না থেকে  পড়াশোনা  জন্য  এবং  বাবা মাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য  গ্রামের নারীদের সঙ্গে  হোগলাপাতা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের  পণ্য তৈরি করতেছি , সেখান থেকে  যে টাকা পাচ্ছি  সেটা দিয়ে পড়াশোনা এবং  হাত খরচের টাকা হচ্ছে  এবং  এর পাশাপাশি  বাবা মাকে ও  কিছুটা আর্থিকভাবে সহযোগিতা  করতে পারছি। তিনি আরো বলেন শুধু আমি একা না এই গ্রামের  অধিকাংশ   মেয়ে  স্কুল কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি  অবসর সময়ে  এই কাজ করে তারা নিজেদের  পড়াশোনার এবং  হাত খরচের টাকা পাচ্ছে  এবং  বাবা-মা কে কিছু টা দিতে  পারছে। হোগলাপাতা দিয়ে কারুপণ্য তৈরি  করা  একই গ্রামের   মনিরা বেগম বলেন  আগে আমার সংসারে অনেক অভাব ছিলো কোনরকমে দিন চলতো  এক খেলে আর এক বেলা খাওয়া হতো না সন্তানদের স্কুলের  পোশাক  কিনে দিতে পারতাম না আমার স্বামী ভ্যান চালিয়ে  যা পেতো তাতে কোন রকমে সংসার  চলতো পরে গ্রামের  মহিলাদের কাছে এই হোগলাপাতার  পণ্য তৈরি করার কথা শুনতে পেয়ে তাদের  সাথে  যোগাযোগ করে এবং  ১৫ দিনের একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে আমিও হোগলাপাতা তৈরি  বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা শুরু করি  এবং  সেখান থেকে  যা পাই তাদিয়ে আমার সংসার  এখন খুব ভালো চলছে   শিশুদের স্কুলের পোশাক  কিনে  দেয়ার পাশাপাশি  তাদের  তাদের  স্কুলের বেতন টিফিনের  খাবার খাওয়ার  টাকাও  দিতে পারছি ।  এছাড়াও  নববিবাহিত জান্নাতী বেগম বলেন  বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি এসে দেখছি যে এই গ্রামের  নারীরা বেকার বসে না থেকে  ৪/ ৫ জন একত্রিত  হয়ে হোগলাপাতা দিয়ে  পণ্য  তৈরি  করছে এবং  আয় করছে  তা দেখে আমি ও আমার উৎসাহে বেকার ঘরে বসে না থেকে  বিয়ের  ৪ দিনের মধ্যে  প্রশিক্ষণ  নিয়ে হোগলাপাতা দিয়ে  পণ্য তৈরি করা শুরু করি  এখন নিজের হাত খরচের জন্য  স্বামীর কাছে টাকা  চাইতে হয় না বরং  আমি নিজেই নিজের হাত খরচের টাকা  স্বামী কে দিচ্ছি  এবং  টুকটাক সংসারের কাছে লাগাচ্ছি । এখন আমার মতো অনেক নারী নিজেই নিজেকে স্বাবলম্বী  তৈরি করে  সংসারের হাল ধরছে  তাই এখন এই খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের খোকশাবাড়ি গ্রামের নাম হয়েছে   হোগলাপাতার  স্বাবলম্বী নারী গ্রাম।
হোগলা পাতা দিয়ে পণ্য  তৈরি করা  আর্টিশিয়ান হাউজ বিডি লিমিটেডের প্রোডাকশন ম্যানেজার হামিদুল হক মোল্লা  বলেন আমাদের যে পণ্য গুলো তৈরি হয় এর কাচামাল নোয়াখালী থেকে নিয়ে আসি ।  নোয়াখালী  থেকে কাচামাল গুলো নিয়ে  আসার পর গ্রাম এলাকায়  যারা কাজ করে  তাদের  হাতে পৌঁছানো হয় ।  কাজ হয়ে গেলে  আমাদের  টিম সেখানে থেকে  চেক করে  নিয়ে আসে এবং  কোন পণ্যর সমস্যা হলে সেটা সমাধান করে ঢাকা পাঠানো হয়। সেখান থেকে  বিভিন্ন দেশে যায় সবচেয়ে  বেশি  এই হোগলা  পণ্য  যায় ইউরোপের  দেশগুলোতে ।  হোগলাপাতা খুব সহজেই পচনশীল  হওয়ায় এবং  পরিবেশ বান্ধব এবং  পরিবেশ দূষণের কোন সম্ভাবনা না থাকায়  ইউরোপের দেশগুলোতে  এর চাহিদা  খুব বেশি ।
বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ -ব্যবস্হাপক চারু চন্দ্র বর্মন বলেন হোগলাপাতার পণ্য  তৈরির মাধ্যমে গ্রামের অনেক নারী স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আর এই পণ্য  তৈরি উদ্যোক্তাদের কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে  বিসিক সবসময় তাদের পাশে থাকবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ