ওসমান গনি, মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেলকে এবার শোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। বুধবার দিন দু’টি মামলায় সে যাবিন পেলেও শোন এরেস্টে মামলার কারণে কারাগার থেকে সে এদিন মুক্তি পাননি। আর তার যাবিনের খবরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলের নেতা ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা এদিন আদালতপাড়াতে যাবিনের বিরোধীতায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। এই বিক্ষোভ মিছিলের কারণে তার মামলার আয়ু পরে আদালতে শোন এরেস্ট মামলার নথি দাখিল করেন। বিধি অনুযায়ি শোন এরেস্ট মামলার নথি আদালতে দাখিল হলে আসামীর উপস্থিতে শুনানী করার নিয়ম রয়েছে। এ কারণে বৃহস্পতিবার জেলা দায়রা ও জজ আদালতে শোন এরেস্ট মামলার শুনানী শেষে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী মোহাম্মদ হান্নান তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আর তাতেই তার যাবিন পাওয়ার পরেও মুক্তির পথটি বন্ধ হয়ে যায়।
৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনতার আন্দোলনের সময় শহরের উত্তর ইসলামপুরের তিনজন গুলিতে মৃত্যু হয়। সেই তিনজনের মধ্যে ২জনের মামলাতে নাজমুল হাসান সোহেলকে আসামী করা হয়। রিয়াজুল ফরাজী হত্যা মামলা নং হচ্ছে ২ (৮) ২৪। এখানে তাকে ৩৫ নং ক্রমিকে আসামী করা হয়েছে। আর সজল হত্যা মামলা নং হচ্ছে ৩১ (৯) ২৪। এখানে তাকে ৭২ নং ক্রমিকে আসামী করা হয়।
বুধবার দিন ফাস্ট আওয়ােের জেলা দায়রা ও জজ আদালতের বিচারক কাজী মোহাম্মদ আদালত থেকে নাজমুল হাসান সোহেল যাবিনে মুক্তির ঘোষণা পান। এই খবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের শিবিরে খবর পৌছে যায়। তখন তারা আদালতপাড়ায় অবস্থান নেন। দুপুর সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান করেন। এ খবরে পুলিশ বিভাগের সকলে এখানে ছুটে আসেন। তখন নাজমুল হাসান সোহেলকে শোন এরেস্ট দেখানোর কারণে বিক্ষোভকারীরা এখান থেকে চলে যান।
নাজমুল হাসান সোহেলকে যে মামলায় শোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে সেটি হচ্ছে ১৫ (৮) ২৪ নং মামলা। দু’টি মামলার যাবিনের কাগজপত্র বুধবার দিন জেলা কারাগারে পৌছলেও শোন এরেস্টের কারণে সেদিন সে আর কারাগার থেকে মুক্তি পাননি। ৪ আগস্টে আলোচিত হত্যা মামলায় প্রথম গ্রেফতার হন নাজমুল হাসান সোহেল। তার আগে আর কেউ এখানে গ্রেফতার হননি।
জানা যায়, ১৯ আগস্ট রাতে মালয়েশিয়া পালানোর জন্য পাসপোর্টের ভিসা ইস্যু করতে গিয়ে ঢাকার নয়া পল্টনের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সামনে থেকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেলকে আটক করে ছাত্র ও জনতা। আটকের পর তাকে রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোহেলকে আটকের সময় তার সাথে থাকা মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল মৃধা দৌড়ে পালিয়ে যায়।