নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর তানোরে পল্লী বিদ্যুতের শাটডাউনে জড়িত আওয়ামী মতাদর্শী কর্মকর্তা (এজিএম) কামাল হোসেন এখানো বহাল তবিয়তে রয়েছে। এনিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। সাধারণ গ্রাহকগণ এই কর্মকর্তার শাস্তির দাবি করেছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ২০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের শাটডাউন করা হয়েছে। তানোরে বিদ্যুৎ শাটডাউনে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী মতাদর্শী কর্মকর্তা সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক (এজিএম)কামাল হোসেন। স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার তানোরে দুপুর থেকে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত একটানা বিদ্যুৎ বিহীন ছিল। একই সঙ্গে রাজশাহীর কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে তানোরের মতো এতো লম্বা সময় ধরে নয়।এটা সরকারকে বিব্রত করার অপকৌশল।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মালার মোড়ের পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের এক কর্মচারী জানান,এজিএম সাহেব ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা ও সাবেক এক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস। সেই সুবাদে রাজনৈতিক বিবেচনায় তার চাকরি হয়।
রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তানোর কার্যালয়ে সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) কামাল হোসেন জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে চান। তা ছাড়া দাবি আদায়ে সারা দেশের কর্মীরা ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।কামাল হোসেন আরও বলেন, দেশের ৬৪টি জেলায় ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আছে। এসব সমিতিতে কর্মরত আছেন প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁরা দেশের ১৪ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন। দেশের মোট গ্রাহকের হিসাবে এটি প্রায় ৮০ শতাংশ। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বোর্ডের কাছে কিছু দাবি জানিয়ে আসছিলেন। দাবি আদায়ে প্রায় ১০ মাস ধরে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এমন ২০ জন কর্মকর্তাকে গত বুধবার চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতের এই কর্মকর্তা বলেন, চাকরিচ্যুত ২০ জনই কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন মহাব্যবস্থাপক (জিএম) রয়েছেন। সম্প্রতি তাঁরা চাকরিচ্যুতির বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর চাকরিচ্যুতির এই আদেশ প্রত্যাহার ও তাঁদের আগের দাবি আদায়ে তাঁরা বিদ্যুৎ শাটডাউন রাখার মতো কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। তাঁরা ঢাকায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ঘেরাও করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। ইতিমধ্যে কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ চালু করার চেষ্টা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও চালু করতে পারিনি।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সচিব হাসিনা বেগম বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ শাটডাউন করে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। বিদ্যুৎ চালু করার ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। মাঠপর্যায়ের সমিতির অফিসগুলো এ নিয়ে কাজ করছে।’