1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
গোপালগঞ্জের শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত আবুল কালাম আজাদ মাগুরার শিশুর শোক না কাটতেই সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার প্রবাসীর স্ত্রীর ঘর থেকে গভীর রাতে শিবির নেতা আটক মৌলভীবাজারের বড়লেখায় তরুণীকে ধর্ষণ, ইউপি সদস্যের ধামাচাপার চেষ্টা বাংলাদেশ নৌযান ও জাহাজী শ্রমিকদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত শ্রীবরদীতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে প্রস্তুতি ও উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা ৯ বছরের স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত গ্রেফতার সত্য সংবাদ প্রকাশের খেসারত বগুড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের হত্যার হুমকিতে সাংবাদিকের মামলা আটপাড়ায় নির্বাচন অফিসের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি সিলেট-৪ এ খেলাফত মজলিস প্রার্থীদের বিচরণ

সাঙ্গ হলো সাধুসঙ্গ ভাঙছে মিলন মেলা

  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৯০ ০৫ বার পঠিত

সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়াঃ অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় আয়োজিত তিন দিনের লালন তিরোধান দিবসের আজ শনিবার শেষ দিন। গত দু’দিন লালন ভক্ত, অনুসারী বাউল, ফকিরদের গান, সাধুসঙ্গ, ভাব আলোচনাসহ নানা কর্মকাণ্ডে মুখরিত ছিল আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ। আজ ভাঙবে সেই মিলনমেলা।

এর আগে গতকাল সকালে বাল্যসেবায় দই ও চিড়া নাশতা দেওয়া হয় বাউলদের। দুপুরে পুণ্যসেবায় ভাত, ডাল, সবজি ও ইলিশ খান তারা। এর পর লালন মতে দীক্ষিতদের খেলাফত (শিষ্যত্ব) প্রদান করেন তাদের নিজ নিজ গুরুরা। এসব লৌকিক রীতির মধ্য দিয়ে শেষ হয় লালন শাহের তিরোধান দিবসে বাউল ও ভক্তদের মূল অনুষ্ঠান সাধুসঙ্গ। তার আগে গত বৃহস্পতিবার চিরাচরিত গুরুবাদী ধর্মের নিয়মে সূর্য ডোবার পরপরই অধিবাসের মাধ্যমে শুরু হয় বাউল ফকিরদের অষ্টপ্রহরের গুরুকার্য।

সাধুসঙ্গ গতকাল সাঙ্গ হলেও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে তিন দিনব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হবে আজ মধ্যরাতে। তবে তিরোধান দিবসকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া গ্রামীণ মেলা চলবে আরও কয়েকদিন।

গতকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুরো আখড়াবাড়িতে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধু, বাউল, লালনভক্ত আর অনুসারীদের গান, আলোচনা আর ভাব বিনিময়ে আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণজুড়ে যেন বিরাজ করছে অন্যরকম এক পরিবেশ। দুপুর ২টার দিকে লালন একাডেমির প্রবেশপথ, লালন শাহর মাজার প্রাঙ্গণ, আখড়াবাড়ি, মেলার মাঠ হয়ে ওঠে লোকে লোকারণ্য। আখড়াবাড়ির ভেতরে হাজার হাজার বাউল ও লালন অনুসারী সাদা কাপড় পরা। অন্য পোশাকেও আছেন অনেকে। দুপুরে তাদের আয়োজকদের পক্ষ থেকে পুণ্যসেবার ভাত, ডাল, সবজি ও ইলিশ খেতে দেওয়া হয়। রীতি অনুযায়ী সাধু-গুরুরা সবাই একসঙ্গে দুপুরের খাবার গ্রহণ করেন।

লালন অনুসারী হৃদয় শাহ জানালেন, সারা বছরের বহুল প্রতিক্ষীত এই মহামিলনে ঘটে যাওয়া সাধু সঙ্গ প্রতিটা ভক্ত অনুসারীদের মধ্যে উৎসারিত। তারা এই সঙ্গকে আত্মধারণ করে ফিরে যাবেন আপন আলোয়। বাউল শিরোমনি লালন শাহর ওফাত দিবসে অনুসারীদের মাঝে এক নিবির আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সাঁইজির যে দর্শন আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের অনেক দেশের মানুষকে আকৃষ্ট করেছে, সেটা নিছক উৎসব পালনের কারণে নয়। এটা আত্মস্বপ্ন থেকে আত্মশুদ্ধির পথে নিয়ে যায়। যখন জ্ঞান সাধনার আত্মতৃষ্ণা ক্রমে বৃদ্ধি পায়। সে কারণে সাঁইজির ভাবাদর্শে একে অন্যের সান্নিধ্যে এসে গানে গানে প্রবেশ করেন মায়ার জগতে।

বিদায়বেলায় রাজশাহী থেকে আসা ফকির আমিরুল শাহ অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, সাধুদের সব কিছুর মূলে গুরু ভক্তি। গুরুকে ভজেই সর্বদা তারা পরমত্মার সন্ধান করে ফেরে। সেই গুরুকে বারবার প্রণাম ও ভক্তি জানিয়ে শিষ্যরা বিদায় নিলেও আবারও তারা ঘুরে ঘুরে আসেন গুরুর এই তীর্থধামে। তাদের যে গুরুর চরণ স্পর্শ করা বড়ই দরকার। নইলে সে তো পাবে না আর দ্বীন-দরিয়ার পাড়।

ঢাকা সাভার থেকে আসা এনাম শাহ বলেন, সমাজের অসঙ্গতি, সাম্প্রদায়িকতা, মানুষে মানুষে অযথা হানাহানি দূর করে চিরন্তন মানবধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন লালন। সাঁইজি তার পদাবলী ও বাণীতে মানুষকে প্রকৃত শুদ্ধ মানুষ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তাই এই উৎসব কেবল উৎসব নয় এখান থেকে লালনের এমন শিক্ষা ও মানবপ্রেম ছড়িয়ে দেবেন দেশব্যাপী।

গত বৃহস্পতিবার রাতে তিন দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ