সামরুজ্জামান (সামুন), কুষ্টিয়াঃ ফকির লালন সম্রাট ছিলেন না, তিনি ছিলেন সাধক। তাঁর বাণী সমাজের সকল ক্ষেত্রে বিদ্যমান বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীক ফকির লালন শাহ ও তাঁর গান। তিনি মানবধর্মে বিশ্বাস করতেন। বিশ্বজুড়ে মানবপ্রেম ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। লালন বহুমাত্রিক এক ব্যক্তিত্ব। তিনি কেবল এই কুষ্টিয়ার নন, তিনি সারা বাংলাদেশের এবং সারা পৃথিবীর বাঙালির সম্পদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়ায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেন, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মতো লালনও আমাদের সম্পদ। তিনি তাঁর কর্মে ও প্রতিভায় বিশেষ কোনো ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন না। লালনের চেতনা অসাম্প্রদায়িক। এই চেতনা না থাকলে বাংলাদেশ থাকে না। আজ অনেক উন্নতি-অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সমাজ যদি অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী না হয়, তাহলে এসব অগ্রগতি টিকবে না।’
ফকির লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফকির লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী। ১৩৪ বছর আগেই সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করতে না পারে। আপনারা আমাদের ধরবেন। এই যে ছাত্র জনতার রক্তের ওপর আমরা যে সরকার গঠন করেছি। দায়িত্ব পেয়েছি। তা দায়সারা হতে পারে না বলেও জানান তিনি।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।
কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, জেলা বিএনপির আহবায়ক কুতুবউদ্দিন, সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আলমাস মামুন, সুইট প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন লালন একাডেমির খাদেম মহম্মদ আলী।
আলোচনা সভা শেষে বাউল ও লালন একাডেমির শিল্পীরা সেখানে লালনের গান পরিবেশন করেন। কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে শতাধিক অস্থায়ী দোকান বসেছে। গান শোনার ফাঁকে সেখানে মানুষ কেনাকাটা করছেন।