মীর ইমরান, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুরের শিবচরে ভূমি আইনে মিথ্যা মামলা করে জোরপূর্বক জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শহিদুল্লাহ মুন্সি নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের মির্জারচর মুন্সিকান্দি গ্রামে। ঐ মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে ভূমি আইনে ২০২৩ এর ৪(১)ক ধারার অভিযোগ এনে একই পরিবারের ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ‘সাজানো একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করে পৈত্রিক ২ শতাংশ ও ক্রয়কৃত ৩ শতাংশ জমি শহিদুল্লাহ মুন্সী দখল করে নিয়েছে।
আমরা সরকারের কাছে সঠিক তদন্তের দাবি জানাই।’
ঘটনার বিষয়ে মামলার বাদী শহিদুল্লাহ মুন্সীর বাড়ি গেলে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। পরে কথা হয় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে। তারা জানান, ‘জমি নিয়ে সমস্যার কথা শুনেছি, কিন্তু তাদের সমস্যার নিয়ে বাশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালিস মীমাংসা করে দিয়েছিল।এ বিষয়ে বাদী শহীদুল্লাহ মুন্সী সালিস মীমাংসাকে তোয়াক্কা না করে গত ৩ মার্চের ১৯ তারিখে মোঃ আব্দুল আউয়াল মুন্সির পরিবারের বিরুদ্ধে একটি ভূমি আইনে মিথ্যা মামলা দেন।
তারপরে শহীদুল্লাহ বালু ভরাট করতে গেলে বাধা দেয় আউয়াল মুন্সী। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই জমির আশেপাশে বাঁশ দিয়ে বেড়া ও মাচাঁ দেওয়া ছিল। সেই বেড়া ও মাচাঁ রাতের আধারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আউয়াল মুন্সীরা ডাক চিৎকার করলে স্থানীয় লোকেরা ছুটে ৯৯৯ এ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনার স্থান থেকে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মুন্সি ও তার মেয়ের জামাইকে আটক করেন।পরে স্থানীয় লোকজনেরা শালিশ মীমাংসা কথা বলে থানা থেকে ছেড়িয়ে এনে কোন শালিশে না বসে উক্ত জমিতে শহিদুল্লাহ মুন্সি তার আত্মীয়-স্বজন এবং বহিরাগত কিছু লোকজন এনে রাতের আঁধারে জোরপূর্বক ভাবে বালু ভরাট করে জমি দখলে করে নিয়ে যান। এ বিষয়ে আউয়াল মুন্সী তাঁর পরিবার প্রতিবাদ করতে আসলে তাদেরকে মারধর এবং হত্যার হুমকি দেন। পরে আউয়াল মুন্সী কোন উপায় না পেয়ে গত ৯ এপ্রিল মাদারীপুর আদালতে একটি দেওয়ানী বন্টন মামলা করেন।তার ঘরের সবাই শিক্ষিত তাদের অধিকাংশই সরকারি চাকরি করে। আমরা প্রশাসন এবং সরকারের কাছে শহীদুল্লাহ মুন্সির বিচার চাই। সে যাতে এভাবে আর কোন মানুষকে হয়রাানি না করতে পারে।
এদিকে মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্রে জানা যায়,শিবচর উপজেলার ৫২নং মৃজারচর মৌজায় বি.আর.এস ৯২৯ নং খতিয়ানের ৮৩৬০ ও ৮৩৬১নং দাগের ১৪ শতাংশ জমিই নাল জমি।
এর মধ্যে ২শতাংশ জমি আউয়াল মুন্সীর পৈত্রিক ও ৩.৪৪ শতাংশ জমি আমেনা বিবির ছেলে আবদুল হাদির নিকট থেকে ক্রয় করেছিলেন।১৪ শতাংশ জমি থেকে শহিদুল্লাহ মুন্সী একই দাগে ৩.৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন সেই হিসেবে ওই সম্পত্তি অংশীদার ছিলেন।সেক্ষেত্রে আবদুল আউয়াল মুন্সী উক্ত জমির পূর্ব দিক থেকে দখলে আর শহিদুল্লাহ মুন্সী পশ্চিম দিকে দখলে ছিলেন।আমার জনি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছেন। এবং আমাদেরকে হত্যার হুমকি দিতেছে।
তার ভয় এলাকায় কেউ কথা বলতে পারছে না। তাদের ভয়ে আমি আমার পরিবার ঠিকমতো এলাকায় বসবাস করতে পারতেছিনা।আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। সরকার এবং প্রশাসনের কাছে দাবি আমার জমিটুকু উদ্ধার করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।
এদিকে শহিদুলের মুন্সির বড় ভাই আব্দুর রব মুন্সী তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আউয়াল মুন্সীকে যে দোকান পুরানো দেখিয়ে মামলা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা, সেখানে কোন দোকান ছিল না ছিল একটি বাঁশের বেড়া।আমি বড় ভাই সে তার মেয়ে দ্বারা আমাকেও মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। তার মত খারাপ লোকের বিচার চাই।
এদিকে স্থানীয় জাফর মোল্লা, হবি বেপারী,আলিম মোল্লা, খলিল মিয়াসহ বেশ কয়েকজন বলেন,মূলত এখানে কোন দোকান ছিল না, এখানে ছিল বাশের বেড়া বা মাচাঁ সে বাঁশের বেড়া মাচাঁ রাতের আধারে পুরে দেওয়ার চেষ্টা করে আউয়াল মূন্সীকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর ফাঁদ তৈরি করে। আমরা এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে সালিশের একজন বাঁশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন বয়াতির মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও কোন সারা মেলেনি।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল্লাহ আল- মামুন বলেন, যদি কেউ অন্যায় ভাবে কারো জমি দখল করে থাকে। আর কাউকে হয়রানি করার জন্য মামলা দেয়। কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে তা উপযুক্ত প্রমাণ যদি থাকে এ বিষয়ে যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে। তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেব।