আলিফ হোসেন,তানোরঃ রাজশাহীর তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) মালশিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ডোনেশনের নামে প্রায় দেড় কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এসব নিয়োগ বাণিজ্যে করা হয়েছে।কিন্তু বিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি টাকাও ব্যয় করা হয়নি।স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে স্কুলে প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ আটজন শিক্ষক এবং ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে স্কুলের উন্নয়নে ডোনেশনের নামে প্রায় দেড় কোটি টাকা বাণিজ্যে করা হয়।এদিকে ২০২০ সালে প্রধান শিক্ষক এবং ২০২৩ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৪টি পদে কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। এসময় স্কুলের সভাপতি ছিলেন কামারগাঁ ইউপি (উত্তর) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন আলী প্রামানিক। এসব পদে নিয়োগে তিনি প্রায় ৮০ লাখ টাকা বাণিজ্যে করেন।
সাবেক এমপি,উপজেলা চেয়ারম্যান, স্কুলের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান ফটিক ও আলাউদ্দিন আলী প্রামানিক মিলেমিশে এসব টাকা লোপাট করেছে। সরেজমিন অনুসন্ধান করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, বিগত ১৯৬৫ সালে উপজেলার সীমান্তবর্তী চৌবাড়িয়া হাট সংলগ্ন মালশিরা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিগত ১৯৮৫ সালে স্কুলটি এমপিওভুক্ত হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ মাটির ঘরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা লেখা পড়া করছে। স্কুলে কোনো লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানার নাই।কিন্ত্ত এই তিনটি পদে জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। স্কুলের ভোকেশনাল শাখার অবস্থা আরো ভয়াবহ। দুটি ঘর দুটিই ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ। বারান্দায় গরু-ছাগল বাঁধা,ঘরের ভিতরে ভাঙা-টেবিল, চেয়ার-বেঞ্চ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। ওদিকে ভাঙাচোরা শহীদ মিনার।চারপাশে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনায় ভাগাড়। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন বলেন, নিয়োগের কোন টাকা স্কুল উন্নয়নে দেয়া হয়নি, নিয়োগের সময় নিয়োগ কমিটির খাওয়া দাওয়ার ব্যয় নিজেকে করতে হয়েছে। সভাপতিকে একাধিকবার বলেও কোন কাজ হয়নি। এমনকি সভাপতি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তার পুত্রকে চাকরি দিয়েছেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুল কমিটির সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আলী প্রামানিক বলেন, নিয়োগের পুরো টাকা সাবেক এমপি ফারুক চৌধুরীকে দিতে হয়েছে। নিয়োগের আগে পুরো টাকা দেয়ার পর নিয়োগ বোর্ড বসানো গেছে। স্কুল উন্নয়নের জন্য কিছু টাকা চাইলেও দেননি। এসব বিষয়ে জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।