1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম

রাজশাহী বিএনপির তৃণমুলে প্রাণচাঞ্চল্য

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৭৩ ০৫ বার পঠিত

আলিফ হোসেন, তানোরঃ রাজশাহী অঞ্চলে দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক পর রাজনৈতিক অঙ্গনে  বিএনপির তৃণমুলে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে। একটানা দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনে শুরু হয়েছে তৃণমূলের মাঠ গোছানোর কাজ। এরই অংশ হিসেবে দ্রুত সময়ের মধ্যে তৃণমূলের কমিটিগুলো ঘোষণা করতে যাচ্ছে দলটি। তৃণমূলের কমিটি ঘোষণার পর পরই ঘোষণা করা হবে জেলা ও উপজেলা কমিটি। কমিটি গঠনে সবার আগে আদর্শিক, পরীক্ষিত, নিবেদিতপ্রাণ প্রবীণ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীর মূল্যায়ন করা হবে। রাজশাহী বিএনপির নিতীনির্ধারনী মহল এমনটিই জানিয়েছে। 
জানা গেছে,রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপির রাজনীতিতে  রাজশাহী-১ আসনেে(তানোর-গোদাগাড়ী)বিএনপি সব থেকে বেশী শক্তিশালী ও গতিশীল রয়েছে। এখানে বিএনপি নেতাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা থাকলেও দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার প্রশ্নে সকলেই ঐক্যবদ্ধ। 
এদিকে মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন।বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় তানোর-গোদাগাড়ী বিএনপির রাজনীতিতে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে। রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপির অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন ব্যারিষ্টার আমিনুল হক। কিন্ত্ত তিনি প্রয়াত হলে বিএনপিতে কিছুটা নেতৃত্ব সংকট দেখা দেয়।তবে মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ায় সেই সংকট কেটে গেছে। এদিকে শরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে তানোর-গোদাগাড়ী বিএনপির তৃণমুলে  রাজনীতি গতিশীল-জোরদার হয়েছে। শরিফ উদ্দিনকে ঘিরে বিএনপির রাজনীতিতে রাতারাতি নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেছে। এতদিন যে সকল নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে নিজেদের রাজনীতি থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছিল তাঁরা আবারো রাজনীতিতে সক্রীয় হয়েছে। আবারও গা-ঝাড়া দিয়ে নবউদ্দ্যোমে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে শুরু করেছেন। যে কারণে দীর্ঘদিন পর এখানে  বিএনপির  রাজনীতিতে ফিরেছে ব্যাপক 
প্রাণচাঞ্চল্য। 
জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহীতে তৃণমূল গোছানো এবং নতুন কমিটি দেওয়া হবে জানিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেন, এবিষয়ে আমাদের সভা হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী যেগুলো জায়গায় কমিটি দীর্ঘদিন থেকে হয়নি সেখানে নতুন কমিটি দেওয়া হবে।  রাজশাহী বিএনপি নতুন করে সাজানো হবে। যারা বিগত দিনে আমাদের সঙ্গে লড়াই সংগ্রামে রাজপথে ছিলো এবং ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। রাজশাহীর বিএনপিতে কোন দলীয় কোন্দল নাই জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি একটি বড় দল। দলে কিছুটা মতবিরোধ এবং কোন্দল থাকতেই পারে। কিন্তু রাজশাহীতে এইরকম কিছুই নেই। আমরা সবাই এক হয়ে একটি একটি সুন্দর বাংলাদেশ গঠনে কাজ করতে চাই। গত আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমূল পরিবর্তন আসে। রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির। দীর্ঘ সময় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করা হবে। দীর্ঘ প্রায় একটানা দেড় দশক ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি ও তার অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে ফিরে এসেছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। তবে নেতারা বলছে অতি উৎসাহী হয়ে কেউ যাতে বিএনপির নাম ব্যবহার করে ‘বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টি করতে না পারে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ- ত্রাণ ও পূর্ণবাসন বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী মহাগর বিএনপির সাবেক  সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল হক মিলন জানান বিএনপি একটি সাংগঠনিক দল। এই দলের নাম ব্যবহার করে যারা অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, “গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট ও জালিম সরকারকে ছাত্র-জনতা আন্দোলন করে বিতাড়িত করেছে। প্রান ভয়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। এর ফলে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত ও দেশ পুনরায় স্বাধীন হয়েছে। আমাদের দলের উপরে নিপীড়ন করেছে শেখ হাসিনার দোসর বাহিনী। নির্যাতিত নেতাকর্মীরা আবার পুনঃউদ্যমে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগঠনে মনোনিবেশ করবে। ” নতুন করে বিএনপিকে সাজানো হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দল গোছানোর কাজ করছি। আপনারা ইতিমধ্যে পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছেন আমাদের বিভিন্ন উপজেলা এবং ইউনিয়নে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করছি। যেমন আমার পবা উপজেলা হড়গ্রাম ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এইভাবেই যেখানে যেখানে দীর্ঘদিন কমিটি হয়নি সেই জায়গাগুলোতে আমরা কাজ করছি। দলে অনুপ্রবেশ ঠেকানোই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করে তিনি আরো বলেন, “বিগত সময়ে আমরা যখন স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন লড়াই সংগ্রাম করেছি তখন আমরা কতটা অত্যাচারিত ছিলাম আপনারা তা জানেন। কিন্তু এখন একটি বিষয় খুব উদ্বেগ এর সঙ্গে লক্ষ্য করছি আমাদের দলেও কিছু অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আমি আমাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বলবো আপনারা এগুলো অনুপ্রবেশকারীদের থেকে সর্তক থাকবেন।” দল পুনরায় সাজানোর উদ্যেগকে সাধুবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিএনপির তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। জেলার বিভিন্ন উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তারা জেলার নেতাদের নির্দেশে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করছে। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “দীর্ঘদিন লড়াই সংগ্রামে রাজপথে ছিলো পুঠিয়া উপজেলা বিএনপি। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের সবচেয়ে বেশি নিযার্তিত করা হয়েছিল। এই ফ্যাসিস্ট খুনি সরকার পতনের পরে আমরা পুঠিয়া উপজেলা বিএনপি নতুন করে সাজাচ্ছি। আমার ৬টি ইউনিয়নে ইতিমধ্যে কমিটি দেওয়া হয়ে গেছে। ইউনিয়নে যাদেরকে কমিটি দিয়েছিলাম তারা আবার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে কাজ করছে। এইভাবেই আমাদের দল গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে যা চলমান থাকবে।” জেলার তানোর উপজেলা বিএনপির  আহবায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান বলেন, “বিএনপি যেহেতু দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে ছিলো তাই এই দলটি পূর্ণরুপ ভাবে সাজানো দরকার। ইতিমধ্যে আমাদের তানোরে ওয়ার্ড কমিটি দেওয়া শুরু হয়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক দল গোছানোর কাজ শুরু করেছি।” দল গোছানোর কাজে নতুন করে সাং- গঠনিক দক্ষতা বাড়বে বলে মনে করেন অঙ্গ সহযোগী সংঠনের নেতৃবৃন্দ। রাজশাহী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহব্বায়ক সোহেল রহমান বলেন,” বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, যার মূল শক্তি হচ্ছে তৃণমূলের কোটি কোটি নেতাকর্মী। বিএনপির অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে সুশৃঙ্খল সুসংগঠিত অবস্থায় আছে। রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য দল গোছানো একটি চলমান প্রক্রিয়া এটা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশ নায়ক জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে চলমান থাকবে এবং আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। রাজশাহীর কয়েকটি উপজেলা ও ইউনিয়নে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নতুন আঙ্গিকে কমিটি দেওয়া। এতে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ ফিরে পাবে বলে জানান তৃণমুলের নেতৃবৃন্দগণ। 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ