মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে হত্যা মামলা করা আসামি মিরকাদিম পৌরসভার আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিনের বাড়িতে ছাত্র জনতা ও বিএনপির আড়ালে অস্ত্রসস্ত্র লাঠিসোঁটা বাহিনী কিশোর গ্যাংয়ের পাহারা অবস্থান।
তবে গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জে শিক্ষার্থীদের ওপরে সশস্ত্র হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় তাদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে বলে গোয়েন্দা সদস্যদের হাতে তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে হত্যা মামলা করা আসামি শাহিনের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছেন গোয়েন্দা সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। প্রয়োজন হলে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করা হবে বলেও জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্র। সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য আরও বলছে, এ দম্পতি এখনও দেশেই অবস্থান করছেন। বিদেশে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। নিরাপদে থাকতে ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছেন তারা।
তথ্য সূত্রে রিয়াজুল ফরাজী (২৮) নিহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবকে প্রধান আসামি করে অন্তত ৫০০ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত রবিবার রাতে নিহতের স্ত্রী রুমা বেগম বাদী হয়ে তার স্বামী রিয়াজুলকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত ১ টার দিকে দাখিল করা অভিযোগ সদর থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে দুই নম্বর আসামি তালিকায় রয়েছেন- পঞ্চসার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, তৃতীয় প্রধান আসামি করা হয়েছে মিরকাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিন, চতুর্থ নম্বর আসামি রামপাল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর সাজ্জাত হোসেন সাগর, শহর ছাত্রলীগ সভাপতি নসিবুল হাসান নোবেল, শহর আওয়ামী লীগ নেতা রায়হানুজ্জামান রাসেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক সামসল কবির মাস্টার, অপসারণ করা গজারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, বাংলাবাজার ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন পীর, শিলই ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান পারভেজ মৃধা, মোল্লাকান্দি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইউছুফ ফকির, যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর সরকারসহ ২০৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া এজাহারে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সংগঠনের অজ্ঞাত পরিচয় আরো ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান সদর থানায় হত্যা মামলা রুজু হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিপ্লবসহ ২০৮ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়য়ে পুলিশ সুপার তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের জরিতদের তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।