সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় কৃষি ও মৎস খাতে ২৪ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে কৃষি খাতে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার টাকা এবং মৎস্য খাতে প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রেমালের টানা ১৬ ঘণ্টার তাণ্ডব ও ৫-৭ ফুট পানি বৃদ্ধিতে গলাচিপা উপজেলাজুড়ে ক্ষতির এ দৃশ্য জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার পর ফুটে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে আউশ বীজতলা, চীনাবাদাম, তিল, মরিচ, গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি, কলা চাষ, পানের বরজ ও বহু বর্ষজীবী ফলের বাগান ছিল। ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির। উপজেলার ৩৫০ হেক্টর জমিতে শাকসবজির আবাদ করা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ে ২৮০ হেক্টর জমির ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। চার হাজার ২৪০ জন কৃষকের এই ক্ষতির পরিমাণ ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর্থিক ক্ষতির দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চীনাবাদাম। ২৮৫ হেক্টর জমির ৭ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার চীনাবাদামের আবাদ নষ্ট হয়ে গেছে। ২১০ হেক্টর জমির পান বরজে ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। ১৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের বীজতলা ছিল, যার ৬০ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হলেও তার অর্ধেকই নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া ৮২ হেক্টর জমির মরিচ, ৬ হেক্টর জমির তিল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার আট হাজার ৬৯০ জন কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ১৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার টাকা।
এ দিকে বেড়িবাঁধ ভেঙে ও বেড়িবাঁধ বিহীন এলাকাগুলোতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ভেসে গেছে মাছের ঘের। উপজেলার প্রায় ৩ হাজার পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা।গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আক্তার জানান, মাঠে বিভিন্ন ধরনের ফসল রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে ফসলের ক্ষতির পরিমাণটা এত বেশি।