মোঃ জাকির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জুড়ীতেও হয়ে গেল প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী। তবে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪” এ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দায়সারা আয়োজন আর নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। গোটা আয়োজন নিয়েই উপজেলার অধিকাংশ খামারিদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) মেলা সকাল ১০ টায় উদ্বোধন হলেও দুপুর সাড়ে ১২ পর্যন্ত স্টলগুলো ফাঁকা থাকায় মেলার আয়োজন নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরকে দায়ী করছেন সাধারণ খামারীরা।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) সহযোগিতায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর উপজেলার স্থানীয় মক্তদীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
সরজমিনে প্রদর্শনীস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রদর্শনীতে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মেলায় ৫০টি স্টল প্রস্তুত করার কথা থাকলেও বাস্তবে স্টল ততটা করা হয়নি। ১৫/২০ টি স্টলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল প্রদর্শনী। এছাড়াও যতগুলো করা হয়েছে এরমধ্যে অধিকাংশ স্টলই ফাঁকা। দিনব্যাপী প্রদর্শনী চলার কথা থাকলেও বেলা সাড়ে ১২ টা নাগাদ অধিকাংশ স্টল ফাঁকা ছিল। এছাড়া উদ্বোধনের পর অতিথিরা চলে গেলে প্রদর্শনী প্রাঙ্গণ ধীরে ধীরে খালি হতে থাকে। দুপুর একটার পর প্রাঙ্গণ প্রায় দর্শকশূন্য হয়ে পড়লে দায়সারা ভাবে প্রদর্শনী শেষ করে চলে যান কর্মকর্তারা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক প্রাণি প্রদর্শনীর দায়সারা আয়োজনের প্রতিবাদ করেন। স্টেজ ও অতিথীদের বসার জন্য চেয়ার বসানোর কথা থাকলেও সবাইকে বসিয়েছেন বেঞ্চে।
প্রদর্শনীতে আগত কয়েকজন দর্শক বলেন, প্রাণি প্রদর্শনী শুনে এখানে এসে দেখি প্রায় অধিকাংশ স্টল ফাঁকা। দুপুরের দিকে কিছু প্রাণী আসলেও এক ঘন্টার মধ্যেই সব শেষ করে কর্মকর্তারা চলে যান। এমন দায়সারা প্রদর্শনী না করাই ভালো।
একাধিক খামারির অভিযোগ, প্রদর্শনীর জন্য প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় থেকে জুড়ী উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে গুটিকয়েক খামারিকে নিয়ে নামমাত্র এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। দায়সারা এ প্রদর্শনীতে কিছু খামারিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও অধিকাংশ খামারিরা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এসময় তারা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে সম্পর্ক ভালো আছে এমন খামারীদের পুরষ্কার দেওয়ার বিষয়েও অভিযোগ করেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রদর্শনীর নামে বরাদ্দ হওয়া অধিকাংশ টাকা মিথ্যা ভাউচারে আত্মসাতের চেষ্টায় দায়সারা এ আয়োজন করা হয়েছে। প্রদর্শনী উপলক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। এ কারণে প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিও ছিল না বললেই চলে। প্রদর্শনী উপলক্ষে মাইকিং ও পোস্টার টাঙানো ও লিফলেট বিতরণ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।
দায়সারা আয়োজনের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রমা পদ দে মুঠোফোনে বার বার অফিসে যাওয়ার অনুরোধ করেন। স্টল ৫০ টি করেছেন কিনা জানতে চাইলে অফিসে গিয়ে জানার অনুরোধ করেন। বাজেট আড়াই লক্ষ টাকা থাকলেও তিনি তা প্রকাশ করতে অপারগতা করে বাজেট ইন্টারনেটে পাবেন বলে ফোন কেটে দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপজেলা নিবার্হী অফিসার লুসিকান্ত হাজং এর মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।