1. crimeletter24@gmail.com : crimelet_crimelet :
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
পঞ্চগড়ে আট দফা দাবিতে সড়কে শুয়ে চা চাষীদের বিক্ষোভ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী মুন্সীগঞ্জে আলোচিত জিল্লুর হত্যার দীর্ঘদিন পলাতক আসামি সম্পদ কারাগারে রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের উপর হাম’লা ও ছাত্রীকে ধর্ষ’ণের পর হ’ত্যার অভিযোগে, তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে আ’টক মুন্সীগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনে হেলমেট পরে গুলি করেন ছাত্রলীগের নোবেল-সাগর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিসির শত অনিয়মের পরেও বহাল পঞ্চগড়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ, আটক ৪ তানোরে পাউবোর  জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণ চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপির ৩ নেতাকে নোটিশ রংপুরে লকার ও কালো কাগজের একটি বান্ডিল উদ্ধার

রাজশাহী-১ নৌকা ডোবাতে তৎপর দলের ৪ প্রার্থী

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১১৬ ০৫ বার পঠিত

আলিফ হোসেন, তানোরঃ রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) ভিআইপি সংসদীয় আসন। জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ জন প্রার্থী এখানেই। এর মধ্যে আওয়ামী লীগসহ সাতটি দল থেকে দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। অন্য চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তবে সাধারণ ভোটারগণ আওয়ামী লীগের নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন না। এ আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। বিপুল জনপ্রিয়তার পাশাপাশি রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। তবে নতুন করে আলোচনায় আসতে মরিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া ও আখতারুজ্জামান আক্তার। 
এ চার প্রার্থীর দাবি—টানা ১৫ বছরে ওমর ফারুক চৌধুরী নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছেন। সেবক নয়, এলাকায় ‘শাসক’ হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এর প্রতিবাদ হিসেবেই তাঁরা ভোটের মাঠে এসেছেন। চার প্রার্থীর প্রত্যেকেই নিজেদের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। 
তবে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিপক্ষের ভোটগুলো চার ভাগে ভাগাভাগি হবে এতে  সহজ জয় পাবে নৌকা। কেননা, দীর্ঘ সময়ে ওমর ফারুক চৌধুরী যেমন জনপ্রিয়তা রয়েছে, তেমনি নিজস্ব বিশাল কর্মী বাহিনীও তৈরি করেছেন। তাছাড়া তিনি তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে দুই উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে গিয়ে নিয়মিত সভা-সমাবেশ করেছেন। এদিকে দুই  উপজেলার  স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও সচেতন মহলের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া উপকারভোগীরা আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
তবে ফারুক চৌধুরীকে ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতার কথা ভাবছেন বলেও আলোচনা রয়েছে । 
ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর কাছে এই ধরনের প্রস্তাব গিয়েছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে। তবে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি কারো সঙ্গেই সমঝোতা করবেন না বলে সাংবাদিকদের স্রেফ জানিয়ে দিয়েছেন। আলাপ-আলোচনায় বসলে অন্য তিন প্রার্থী চিন্তা-ভাবনা করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন। 
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি আগে এই দুই উপজেলায় তেমন সক্রিয় ছিলেন না। শুধু নিজের নানার বাড়ি তানোরের মুণ্ডুমালা এলাকায় কিছু সামাজিক কাজকর্ম করতেন। তবে প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকে ভোটের মাঠে ছুটে বেড়াচ্ছেন। হাটে, ঘাটে, মাঠে থেকে শুরু করে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পর্যন্ত যাচ্ছেন তিনি। কিন্ত্ত
সবখানে তিনি ‘ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে’ আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে ভোট চাইছেন যেটা সাধারণ ভোটারগণ ভালভাবে দেখছেন না। এছাড়া বছরের পর বছর বরেন্দ্র অঞ্চলে যে পানির সমস্যা, তা নিরসনের কথা বলছেন। ফলে এই কয়েক দিনের প্রচারেই ভোটের মাঠে তিনি আলোচনায়  উঠে এসেছেন।
এদিকে নৌকার বিরুদ্ধে চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলে জয় কতটা সহজ, এমন প্রশ্নে মাহিয়া মাহি গত মঙ্গলবার বলেছেন, ‘আমি যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই ভালো সাড়া পাচ্ছি। ইনশা আল্লাহ আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। স্বতন্ত্র চার প্রার্থীর মধ্যে সমঝোতা হলে তার সরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সমঝোতার কেউ কোনো প্রস্তাব দেয়নি। এ রকম কোনো সম্ভাবনাও নেই। আমি সরে যাব না। যে যে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবেন, আমি তাঁদের সঙ্গেই লড়তে চাই।’ 
এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীবিরোধী হিসেবে পরিচিত তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানীও ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হবে বলে মনে করছে তার অনুগত কর্মী-সমর্থকেরা। তবে গোলাম
রাব্বানী আশা করছেন, বর্তমান এমপিকে ঠেকাতে তাদের চারজনের মধ্যে একটা সমঝোতা হবে। তিনি বলেন, ‘সবাই হয়তো প্রার্থী থাকবেন না। আগামী দু একদিনের মধ্যে একটা কিছু হতে পারে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে যে ভোট পড়বে, তার ৭০ ভাগ আমি একাই পাব। আমি আমার জয় নিয়ে চিন্তা করি না।’ 
এ আসনে নির্বাচন করতে দীর্ঘ সময় ধরেই ভোটারদের কাছাকাছি থাকতে চেষ্টা করেছেন আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া। গোদাগাড়ী উপজেলায় তাঁর বাবার বাড়ি। দুই উপজেলায় তাঁর নিজস্ব কর্মী-সমর্থকও আছে। প্রচার-প্রচারণা শুরুর এক সপ্তাহ পর ভোটের মাঠে এসে তিনি ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন। 
ভোটের মাঠে স্বতন্ত্রদের মধ্যে সমঝোতার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি এখনো কোনো প্রস্তাব পাইনি। আমরা সবাই তো প্রতীক পেয়েছি। যে যার মতো ভোটের কাজ করছি। আমিও তো এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে আছি। মানুষ আমাকে ভালোবাসে। দেখা যাক, সামনে কী হয়।’ 
এ আসনের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান আক্তারও নিজের মতো করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও বর্তমান এমপি ফারুকের বিরোধী। তাঁকেও আসনটির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ধরা হচ্ছে। আখতারুজ্জামান গোদাগাড়ীর দেওপাড়া  ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হিসেবে তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত বছর অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে দলীয় প্রার্থীর কাছে হেরেছিলেন। 
স্বতন্ত্রদের মধ্যে সমঝোতার প্রশ্নে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘দেখতে হবে প্রস্তাবটা কোন জায়গা থেকে আসছে। আমি যাদের নেতা মানি, সেই জায়গা থেকে যদি বসার প্রস্তাব আসে তাহলে তো বসতে আপত্তি নেই। বসার পরে কী সিদ্ধান্ত হবে সেটা পরের কথা। এখন ভোটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমি তো মনে করি, ভোটাররা ভোট দিতে পারলে আমিই নির্বাচিত হব। কারণ, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একজন এক সময় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে তিনিও নানা অপকর্ম করেছেন। ভোটাররা সেটাও বিবেচনা করছেন।’ 
এ আসনের স্বতন্ত্র চার প্রার্থীর প্রত্যেকেরই মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল। আপিল করে চারজনই প্রার্থিতা ফিরে পান। প্রতীক বরাদ্দের আগেই নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছিলেন মাহিয়া মাহি। আর আদালত ঘুরে গোলাম রাব্বানী প্রতীক বরাদ্দের একদিন পর, আখতারুজ্জামান চার দিন পর এবং আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়া এক সপ্তাহ পর প্রতীক পান। আখতারুজ্জামান ঈগল প্রতীকে, গোলাম রাব্বানী কাঁচি প্রতীকে, ডালিয়া বেলুন প্রতীকে এবং মাহি ট্রাক প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে নৌকার লোক দাবি করে নৌকার বিপক্ষে কথা বলে নৌকা ডোবানোর চেষ্টা সাধারণ নেতা ও কর্মী-সমর্থকেরা।
রাজশাহী-১ জাতীয় সংসদের ৫২ তম আসন। এ আসনের তানোর উপজেলায় পুরুষ ভোটার ৯০ হাজার ১৪৩ জন, আর নারী ভোটার ৯০ হাজার ৮৭০ জন। গোদাগাড়ী উপজেলায় পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৪৮ হাজার ২৭০ জন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ