সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে জমিজমার জেরে মারধরে ৪ জন গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে।
আহতরা হলেন আনোয়ার বাদশা (৩০), মোঃ কালাম বাদশা (৬৫), মোঃ জিদান খা (২০) এবং মোঃ ইমরান চৌকিদার (২৫)। এলাকাবাসী আহতদেরকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জুবায়ের বলেন, আমার চিকিৎসাধীনে রাঙ্গাবালীর ৪ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা ২য় তলায় ৪, ৫, ৬ ও ৭নং বেডে ভর্তি আছেন। তাদের প্রত্যেকের মাথায় ইনজুরি আছে এবং শরীরে কালো কালো দাগ আছে।
এ বিষয়ে আহত আনোয়ার বাদশার জানান, গত (১১ ডিসেম্বর) সোমবার বিকাল ৪টার দিকে জমিতে ধান দেখে প্রতিপক্ষের বাড়ী সংলগ্ন দক্ষিন পাশে সরকারি রাস্তার উপর পৌছা মাত্র প্রতিপক্ষরা মো. সাবু গাজী (৩০), মো. তাহেজ গাজী (৬৫), মোঃ জাহিদ তালুকদার (২২), মো. জিহাদ হাওলাদার (২০), মোঃ সুজন (৩০), মোঃ মিলন (২৬), মোসাঃ নিরু বেগম (৩৫) একত্রিত হয়ে ধারলো বাংলা দা, বগি দা, ছেনা, কাছি, লাঠিশোটা নিয়ে আমার উপর আক্রমণ করে এবং আমাকে আমার জমির ধারে কাছে যেতে নিষেধ করে। আমাকে বাঁচাতে আমার বাবা মো. কালাম বাদশা, মো. জিদান খা এবং মো. ইমরান চৌকিদার এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষরা তাদের উপরও চড়াও হয়ে আমাদেরকে এলোপাথারীভাবে কোপাতে থাকে। আমাদের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এসে পড়লে মারধরকারীরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে মো. কালাম বাদশা বলেন আমার ছেলেকে মারধর করায় আমি আসলে আমাকেও ওরা রেহাই দেয় নাই। আমাদেরকে উদ্ধারে মো. জিদান খা এবং মো. ইমরান চৌকিদার আসলে তাদেরকেও রেহাই দেয় নাই। আমি বৃদ্ধ মানুষ। আমি কি মারধর করতে পারি। ওরা আমাকে গরুর মত পিটিয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ মো. সাবু গাজীর কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারাও আমাদেরকে মারধর করেছে। আমরাও আহত হয়েছি। ওই জায়গার মধ্যে আমাদেরও ভাগ আছে। এ সম্পর্কে বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নসরু মৃধা বলেন, এই জমির প্রকৃত মালিক আনোয়ার বাদশার বাবা মো. কালাম বাদশা গংদের। এই জমি মো. সাবু গাজী গংরা দাবী করলে এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার বসা হলেও মো. সাবু গাজী গংরা সালিশী মানে না। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে দীর্ঘদিন ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়। যার কারণে আনোয়ার বাদশা গংদের উপড় চড়াও হয়ে সাবু গাজী গংরা মারধর করে। এ সম্পর্কে বড়বাইশদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আনোয়ার বাদশা বাদী হয়ে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) গলাচিপা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।