তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি -ঃ- রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী চৌবাড়িয়া হাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে ঐতিহ্যবাহী চৌবাড়িয়া পশুহাট ভাঙা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। ইতমধ্যে পশুহাটে বেপারী ও ক্রেতা-বিক্রেতাগণের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাওয়ায় সাধারণের মনে সেই শঙ্কা আরো স্পষ্ট হচ্ছে। এতে ইজারাদারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ধীরে ধীরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। এদিকে গত ২৭ এপ্রিল বৃহস্প্রতিবার এলাকাবাসি ডাকযোগে জেলা প্রশাসক(ডিসি), পুলিশ সুপার(এসপি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌবাড়িয়া পশুহাট ইজারদারের লোকজন সরকার নির্ধারিত (টোল) হাসিল গরু-মহিষ প্রতি ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮২০ টাকা ও ছাগল-ভেঁড়া প্রতি ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৫২০ টাকা করে জোরপুর্বক আদায় করছেন।
স্থানীয়রা জানান, চৌবাড়িয়া পশুহাটের ইজারা ছিল ভ্যাট ব্যতিত প্রায় আড়াই কোটি টাকা। কিন্ত্ত চলতি অর্থবছরে হিংসাত্মক মনোভাবে ভ্যাট ব্যতিত প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকায় হাট ইজারা নিয়েছেন মোজাফফর হোসেন। তবে হাট ইজারা থেকে বিনিয়োগকৃত টাকা উঠানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। ফলে অতিরিক্ত ইজারার টাকা উত্তোলনের জন্য ইজারদারের লোকজন ক্রেতা-বিক্রেতার ওপর জুলুম-নির্যাতন করে টোল আদায়ের নামে সরব চাঁদাবাজি করছে।
কিন্ত্ত রশিদে বিক্রিয়কৃত পশুর মূল্য উল্লেখ থাকলেও আদায়কৃত টাকার অঙ্ক
লিখা থাকেছে না। এসব কারণে বেপারী ও ক্রেতা-বিক্রেতাগণ চৌবাড়িয়া হাট থেকে মূখ ফিরিয়ে নিয়েছে, এতে হাটের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, চৌবাড়িয়া পশু হাট এলাকার রাজনীতি
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ হাটের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। এলাকার উন্নয়নেও ব্যাপক ভুমিকা রেখে আসছে। যে কারণে চৌবাড়িয়া পশুহাটের ক্ষতি হলে, এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে, পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মহীন হবে। এতে প্রশ্ন উঠেছে অযৌক্তিকভাবে কেনো চারগুন বেশী দামে হাট ইজারা নেয়া হলো। আবার টোল আদায়ের নামে কেনো ক্রেতা-বিক্রেতা ও বেপারীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে হাট ভেঙে গেলে দায় নিবে কে ? এদিকে নাম প্রকাশে একাধিক সুত্র জানায়, রাজশাহী মহানগরীর এক হাট ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগসাজশ করে চৌবাড়িয়া পশু হাট ভাঙার উদ্দেশ্যে, ইচ্ছেকৃতভাবে চার গুন বেশী টাকায় হাট ইজারা নিয়ে টোল আদায়ের নামে জোরপুর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চৌবাড়িয়া হাট ইজারাদার মোজাফফর হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টোল আদায়ে ছোটোখাটো ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি তো থাকেন না, তার লোকজন টাকা আদায় করেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে ম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায়ের কোনো সুযোগ নাই। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে চৌবাড়িয়া হাট ইজারদারের লোক লুৎফর রহমান বলেন, সারাদেশে পশুহাটে (টোল) হাসিল আদায়ে নয়ছয় হয়। আমাদের এখানেও টোল আদায়ে উনিশ-বিশ হচ্ছে এটা স্বাভাবিক ঘটনা, বিনিয়োগ করা টাকা তো উঠাতে হবে।