ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি -ঃ- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বুধবার বেশ শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো ধরণের বিশৃংখল পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি। দিনভর মেঘে ঢাকা থাকা আকাশে ভোটার উপস্থিতি ছিলো আশানুরূপ কম।
পদত্যাগ-পরবর্তী বহিস্কৃত বিএনপি নেতা আবদুস সাত্তার ভ‚ঞার বাদে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট খুব একটা চোখে পড়েনি। আবদুস সাত্তার ভ‚ঞার নিজ এলাকার কেন্দ্র অরুয়াইলে তার পক্ষ নিয়ে অনেকে গোপন ভোটে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে উপ-নির্বাচনের নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক বিএনপি নেতা আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরীন ভোট দিতে এসে পরিবেশ দেখে ভোট না দিয়েই ফিরে গেছেন। এ নির্বাচনকে তিনি অসুস্থ নির্বাচন বলে উল্লেখ করেন।
অপরদিকে নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্ব›িদ্ব আবদুস সাত্তার ভূঞা নিজ কেন্দ্র পরমানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। দুইজনের কাঁধে ভর করে এসে তিনি ভোট দেন। বয়সের ভারে ন্যুজ ৮৪ বছর বয়সি সাত্তার নির্বাচনী প্রচারণায়ও তেমনভাবে অংশ নিতে পারেননি। মূলত আওয়ামী লীগের আঁকা ছঁকে তিনি নির্বাচন কর্মকান্ড পরিচালনা করেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার ১টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরীন। এ সময় প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলে তিনি ভোট দিতে নির্ধারিত কক্ষে গিয়েও ফিরে আসেন।
এ সময় সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, ‘এটি একটি অসুস্থ নির্বাচন। একজন ভোটার আঙুলের ছাপ নিয়ে অন্যজন গিয়ে ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। আমাদের কর্মীদের বের করে দেওয়া ও এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ভোটের এই পরিবেশ দেখে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে বর্জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।’ তিনি এ সময় নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান দাবি করেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আবদুল হামিদ ভোটে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে তার কয়েকজন এজেন্টকে অহেতুক বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন।
আশুগঞ্জ উপজেলা শ্রমকল্যাণ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সৈয়দ রিয়াদউদ্দিন জানান, আবদুস সাত্তারের এজেন্টরা গোপন কক্ষে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপ-নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা অরবিন্দ বিশ্বাস এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।
বিকেলে ভোটার বেড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, যে কয়টি কেন্দ্র ঘুরেছেন ও খবর পাচ্ছেন সবগুলোতেই শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, ওই সময় নাগাদ তিনি অন্তত ২০টির মতো ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন। আকাশ মেঘলা থাকায় ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম। পরে আরো ভোটার বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।