ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি -ঃ- বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত। এরপর মেয়েটিকে কুপ্রস্তাব। অত:পর বাসায় এসে দরজায় টুকি। শেষ পর্যন্ত রাস্তায় আটকে শ্লীলতাহানি। এ অবস্থায় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। মানসিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে মেয়েছি। ওই মেয়েটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ গ্রামে।এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে আমোদাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ আবুল কালামের ছেলে মো. শাকিল মিয়া (২২) ও একই গ্রামের মো. শরীফ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ তানভীর মিয়া (২০) কে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে গত দু’দিনেও এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি ও পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি।
অভিযোগ সূত্রে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে আমাদোবাদ আলহাজ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণি পড়–য়া এক ছাত্রীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করে শাকিল। এমনকি রাতে তার বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজায় টুকি দেয়। বাবা থেকেও না থাকা ওই ছাত্রীর একমাত্র অভিভাবক তার মা নানা দিক চিন্তা করে ওই যুবকের পরিবারের কাছে বিচার প্রার্থণা করেন। এতে শাকিল আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। ২৫ জানুয়ারি ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে পথরোধ করে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। এ সময় শাকিল তার পরিচিত তানভীরও সঙ্গে ছিলো। এ সময় শাকিল তাকে পিছন দিক থেকে জোরপূর্বকভাবে ঝাপটে ধরে এবং তানভীর হাতে থাকা লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে।
মারধরের শিকার ওই ছাত্রীর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি অসহায় মানুষ। আমার মেয়েকে উত্যক্ত করার বিষয়টি আমি তাদের অভিভাবকদেরকে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করা হয়। স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।’
ওই মেয়ের মামা বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমার ভাগ্নি স্কুলে যায় না। মানুষ নানা কথা বলছে বলে সে বাড়ি থেকে বের হয় না। স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। তবে এতেও কোনো সাড়া নেই।’
উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘ওই স্কুল ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও মারধর করার বিষয়টি জানতে পেরেছি। সামাজিকভাবে মীমাংসার জন্য ডাকা হলেও অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।’
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম জানান, ছাত্রীর মা এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।