তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি -ঃ- রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগ ও নৌকাবিরোধীদের ফের সক্রিয় হবার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। স্থানীয় সুশিল সমাজ ও নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্রুপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে, বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন। গত ১২ জানুয়ারী বৃহস্প্রতিবার তানোর পৌরসভা চত্ত্বরে পদবঞ্চিত গোলাম রাব্বানী এবং আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে তৃণমুল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে আয়োজিত কথিত প্রস্ত্ততি সভা নিয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণের মাঝে এসব ক্ষোভ-অসন্তোষ এবং ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সুত্রপাত হয়েছে। এদিকে কথিত সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক রাকিবুল সরকার পাপুল, সরনজাই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, আব্দুস সালাম, কামারগাঁ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মসলেম উদ্দিন প্রামানিক, পৌর যুবলীগ সভাপতি রাজিব সরকার হিরো,শরিফুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র আরব আলী, মৃদুল কুমার ঘোষ, মেয়র ইমরুলের ভাই সোহেল রানা, শিক্ষক মাহবুর রহমান, আসাদুজ্জামান আসাদ, গাজিমুদ্দিন জকি, গোলাম মোস্তফা, আরিফুজ্জামান বাচ্চু মোল্লা ও প্রতাপ হালদার প্রমুখ। তৃণমুলের অভিমত, সভায় যারা উপস্থিত ছিলো তারা সবাই চেনা মূখ যারা বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করে আসছে। ফলে এরা কখানো নৌকার ভাল চাইনি এখানো চাই না,এদের উদ্দেশ্যে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।
স্থানীয়রা বলছে,আওয়ামী লীগের জনবিচ্ছিন্ন, পদবঞ্চিত এবং ষড়যন্ত্রকারি হিসেবে পরিচিত
গোলাম রাব্বানী ও আব্দুল্লাহ আল-মামুন দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্য ফের নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।এদিকে এখবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়েছে। তৃণমূলের ভাষ্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের পর তাদের রাজনৈতিক কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। এমনকি গত ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস,আওয়ামী লীগের
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, মহান বিজয় দিবস, ২১ আগষ্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসে তাদের কোনো কর্মসূচি চোখে পড়েনি। কিন্ত্ত হঠাৎ ১২ জানুয়ারী বৃহস্প্রতিবার তানোর পৌরসভা চত্ত্বরে ত্যাগী ও তৃণমুল নেতাকর্মীদের আয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী আগমণ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগমণ উপলক্ষে প্রস্ত্ততি সভায় বক্তারা স্থানীয় সাংসদকে কটাক্ষ করে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। ফলে এই সভা নিয়ে দলের নেতাকর্মীসহ জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দলের সভাপতি, আর সাংসদ দলীয় মনোনয়নে তিনবার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। সেই বিবেচনায় সাংসদ তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরই প্রতিনিধি, তাহলে সাংসদের বিরুদ্ধে সমালোচনা মানে তো প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনার সামিল। আবার যেখানে দলীয় সাংসদ, উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা কমিটি, পৌর কমিটি ও ইউপি কমিটি রয়েছে।সেখানে তাদের আমন্ত্রণ না জানানো বা অনুপোস্থিতিতে কোনো কর্মসুচি বা সভা কি আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসুচির স্বীকৃতি বা মর্যাদা পায়, অবশ্যই পায় না।তৃণমুলের ভাষ্য, এরা ষড়যন্ত্রকারী সব সময় দলে কোন্দল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করে আসছে, তারই ধারাবাহিকতায় এসব কর্মসূচি। তবে এবারো মুলধারা ও তৃণমুলের কাছে থেকে এরা তেমন কোনো সাড়া পেতে ব্যর্থ হয়ে রণেভঙ্গ দিয়েছে।
জানা গেছে, বিগত জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনসহ প্রতিটি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী দেয়াসহ দল, নেতা ও নেতৃত্বের সঙ্গে বেঈমানী এবং নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এরা সরাসরি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের কর্মকাণ্ড দেখে নেতাকর্মীরা বলছে,
তানোর পৌরভবন আওয়ামী লীগবিরোধী এবং এমপি ঠেকাও ষড়যন্ত্রের নিরাপদ আস্থানায়
পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছে, তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভার দুই মেয়রের ঘাড়ে ভর করে এরা
আওয়ামী লীগ ও এমপি বিরোধী সকল পরিকল্পনা করছে। এদের এখন রাজনীতির মাঠে অবস্থানের মতো তেমন কোনো জায়গা নাই, দুই মেয়রকে তারা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহী আগমন উপলক্ষে তৃণমুল ও ত্যাগীদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। তারা বলেন, এদিন বিশাল শো-ডাউন করা হবে, আগামিতে প্রমাণ হবে কারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ। এবিষয়ে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, এরা ষড়যন্ত্রকারি দলের পদ হারিয়ে দলে বিভক্তি সৃষ্টির জন্য
নতুন ভাবে ফের ষড়যন্ত্র করছেন, এভাবে সভা করার কোন অধিকার তাদের নেই। তিনি বলেন, তারা মুলত ষড়যন্ত্রকারি অতীতেও করেছে, এখনও করছেন, আগামীতেও করবেন এটা সকলের কাছে পরিস্কার, তৃনমুল বা ত্যাগী নামে কোনো সংগঠন আছে বলে তার জানা নেই, আগামিতে দলের নেতাকর্মীরাই এদের উচিৎ জবাব দিবেন বলে তিনি দৃঢ আশাবাদী।তিনি বলেন, এদের পিছনে কারা আছে তাদেরও চিহ্নিত করে মূল থেকে উৎপাটন করতে হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন বলেন, তৃণমুল বা ত্যাগী সংগঠনের নাম দিয়ে সভা হয় প্রথম শুনলাম। তিনি বলেন, এরা ষড়যন্ত্রকারি দলের ভিতরে নতুন করে দ্বন্দ্ব সৃষ্টিতে মরিয়া, এদের ষড়যন্ত্র কখানো সফল হয় নি আর হবেও না।এবিষয়ে
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রদীপ সরকার বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রয়াত শাফিউল ইসলামের ভাই মাইনুল ইসলাম স্বপন হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি করে উঠে এসেছি, এমপি ফারুক চৌধূরী জেলার সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক। জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত যিনি পাঁচবার এমপির টিকিট পেয়েছেন, যাকে নেত্রী প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন, যিনি শহীদ পরিবারের সন্তান এর চেয়ে ত্যাগী আর কি হতে পারে। যারা তৃনমূল বা ত্যাগী নামে সভা করছে তারা দেশরত্নের নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় পদ পদবি হারিয়েছেন। তারা ফের নতুন রুপে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছেন এটা তারই বহিঃপ্রকাশ।