মইনুল ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া -ঃ- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি’র সঙ্গে আইজীবীদের সাক্ষাতের পর ‘জট’ খোলার সম্ভাবনবার মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির কর্মবিরতি আরো তিনদিন বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হওয়া আইনজীবী সমিতির সভায় গৃহীত নতুন কর্মসূচি অনুযায়ি আগামী ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। তবে এর মধ্যে বিষয়টির সুরাহা হলে আইনজীবীরা কাজে যোগ দিবেন। আইনজীবীরা তাদের দাবিতে অটল রয়েছেন।
ব্র্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে ‘অচলাবস্থা’ বিরাজ করছে টানা ১২দিন ধরে, যা কর্মদিবস হিসেবে ১০ দিন। এতে দুর্ভোগে বিচার প্রার্থীরা। সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদেরকে। যদিও কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা আদালতে নিয়মিত আসছেন। তবে আইনজীবীদের বেশিরভাগ আদালতে এলেও কর্মবিরতি থাকায় তারা শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন না। এতে করেই আদালতে চলছে ‘অচলাবস্থা’।
এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও বিচারকের নামে কুরুচিপূর্ণ শ্লোগানসহ বিচারকাজ বিচারকাজ বিঘœ করার অভিযোগে দু’দফায় ২৪ আইনজীবীকে উচ্চ আদালতে তলব করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অমান্য করে একজন আইনজীবী মামলা দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
অপরদিকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এম.পি’র সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে আইনজীবীদের সাক্ষাতের বিষয়টি সমস্যা সমাধানে আশার আলো দেখায়। আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ‘জট’ খোলার সম্ভাবনা দেখছেন আইনজীবীরা। সিদ্ধান্ত এলে আইনজীবীরা দ্রæতই কাজে যোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন। এরই মধ্যে এলো আইনজীবীদের নতুন কর্মসূচি।
আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকের অশোভন আচরণের অভিযোগ এনে ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে সংশ্লিষ্ট আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। একই সঙ্গে তারা দু’জন বিচারক ও একজন নাজিরের প্রত্যাহার দাবি করেন তাঁরা। বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৩ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারিরা।
এজলাসে ঢুকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক –আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৬ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ তিন আইনজীবীকে আগামী ১৭ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। এদিকে বিচারকের নামে কুরুচিপূর্ণ শ্লোগান দেওয়ার অভিযোগে আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদকসহ ২১ জনকে ২৩ জানুয়ারি আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-আজিজের বেঞ্চ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি আমাদেরকে আশ^স্থ করেছেন। আশা করি ওনি সমাধান করে দিলে আমরা দ্রæত কাজে যোগ দিতে পারবো।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দুই বিচারকের প্রত্যাহার এবং নাজির মমিমুলকে প্রত্যাহারপূর্বক শাস্তির দাবি করে আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত দিয়েছি।’ নতুন কর্মসূচি দেওয়া হলেও এর মধ্যে সমস্যা সমাধান হলে আইনজীবীরা কাজে যোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।