তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি -ঃ- রাজশাহীর তানোরের তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজের নতুন পরিচালনা কমিটির বৈধতা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করায় জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। গত ৩ আগষ্ট বুধবার উচ্চ আদালতে কলেজ পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য পিয়ারুল হকের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল গোফরান দুলাল রিট আবেদন করেন। এদিকে রিট আবেদনের খবর ছড়িয়ে পড়লে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও সচেতন মহলে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে, দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। স্থানীয়রা জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার কলেজের কয়েকটি শূণ্য পদে জনবল নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। কিন্ত্ত রিটকারিদের কারণে তা স্থগিত হয়েছে। পরবর্তীতে আবারো জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্ত্ত ফের রীটের কারণে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতদের খবরে তালন্দ এলাকাবাসি তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা বলছে, কলেজের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করতেই উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত হয়ে রিট করা হয়েছে। অথচ তাদের সময়ে জাল সনদে অনেকের চাকরি হয়েছে। কিন্ত্ত নতুন কমিটির কাছে থেকে এমন সুবিধা পাবেন না বলে কমিটির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বয়োজৈষ্ঠ শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধি বলেন, স্থাপনের পর থেকেই তালন্দ কলেজ স্থানীয় সুবিধাবাদী একটি পরিবারের কাছে জিম্মি ছিল, ওই সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বঞ্চিত করে কমিটির সদস্যর পরিবার থেকে অযোগ্যদের চাকরি দেয়া, নীতিমালা লঙ্ঘন করে দারুল ইহসানের অবৈধ সনদ দিয়ে চাকরি, আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেয়া, কর্মচারীকে শিক্ষক প্রতিনিধি ও শিক্ষক-কর্মচারীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের ঘটনা ছিল স্বাভাবিক। স্থানীয়রা ওই সুবিধাবাদী পরিবারের হাত থেকে কলেজকে উদ্ধার ও গ্রহণযোগ্যদের নিয়ে একটি পরিচ্ছন্ন কমিটি দিতে সাংসদের কাছে অনুরোধ করেন। ইতমধ্যে সকলের মতামতের ভিত্তিতে কলেজ পরিচালনার জন্য একটি পরিচ্ছন্ন ও বির্তকমুক্ত কমিটি করা হয়েছে। কিন্ত্ত একটি চক্র কমিটির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক অধ্যক্ষ বলেন, যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে উচ্চ আদালত যেতে পারে তারা আর যাই হোক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল চাই না। তিনি বলেন, এদের চিহ্নিত করে প্রতিহত করা সকলের কর্তব্য, একটা সময় এরা কলেজকে পারিবারিক কলেজে রুপান্তর করেছিল।এবিষয়ে রিটকারি পিয়ারুল হক বলেন, তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজে নতুন গঠিত গর্ভনিং বর্ডি যথাযথ নিয়ম মেনে গঠিত হয়নি। অধ্যক্ষের পছন্দের ব্যক্তির নাম গর্ভনিং বডি গঠনের সময়ে নিয়ম না মেনে একাধিক পদে সুপারিশ করা হয়েছিল। তাছাড়া কমিটিতে তিনি যাতে সদস্য পদে আর না আসতে পারে সেজন্য এ কাজ করা হয়েছে। মূলত আর্থিক বিনিময়ে কলেজের কয়েকটি পদে নিয়োগ দিতে এই কমিটি গঠন করেছেন অধ্যক্ষ ও তাঁর অনুসারীরা। এবিষয়ে তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বিষ্ণুপদ সরকার বলেন, কমিটি নিয়ে রিট হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।তিনি বলেন, যারা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে যায় তাদের নিয়ে কথা বলতেও রুচিতে বাধে।