বিশেষ সংবাদদাতা -ঃ- আগামী শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২২ তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলন থেকেই পুনর্গঠন করা হবে দলের বিভিন্ন কমিটি, পুনর্বিন্যাস করা হবে বিভিন্ন পদ। এবার দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আছেন অন্তত ১০ জন প্রার্থী। তবে কে শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদ পাবেন তা কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই পদে প্রার্থী হতে অনেকেরই ইচ্ছা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। আমার জানামতে, এ পদে অন্তত ১০ জন প্রার্থী আছেন, যারা সাধারণ সম্পাদক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তাদের মধ্যে কে হবেন, তা কাউন্সিলরদের মতামতের প্রতিফলনে এবং নেত্রীর সিদ্ধান্তে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বোঝা যাবে। এবারের সম্মেলনে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে আসেন কাদের। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘অপরিহার্যতা’ তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের সভাপতি যিনি আছেন, তিনি আমাদের ঐক্যের প্রতীক। তিনি এখানে অপরিহার্য। তাকে সমর্থন করে না এমন একজন কাউন্সিলরও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।
তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি, এবারের সম্মেলনে যে কমিটি হবে, তাতে তেমন একটা পরিবর্তন হওয়া সম্ভব কম। পরবর্তী সম্মেলন নির্বাচনের পরে হবে। আপাতত বড় ধরনের কোনও পরিবর্তনের ব্যাপারে আমরা ভাবছি না। তবে কাউন্সিলরদের মতামতের ওপর সবকিছু নির্ভর করবে। আমি এই মুহূর্তে কোনও কিছু প্রেডিক্ট করতে চাই না।
বিতর্কিতদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের ভাবনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের নির্বাহী কমিটি অত্যন্ত সক্রিয় একটা কমিটি। করোনার মধ্যেও কাজ করতে দেখেছি। নেত্রীর ওপর নির্ভর করে সবকিছু। আমরা কেউ পারফেক্ট মানুষ না, ভুল-ত্রুটি নিয়েই মানুষ। নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে অনেক কিছু চিন্তাভাবনা করতে হবে। বিতর্কিতদের ব্যাপারে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহযোগিতায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। ২০৪১ পর্যন্ত উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবো আমরা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাবো এবং এবারকার সম্মেলন হবে একটা চ্যালেঞ্জিং টাইমে।
বৈশ্বিক যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ সংকটে আছে মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে এবারের সম্মেলনে স্মরণকালের বৃহৎ উপস্থিতি থাকবে। এবারের সম্মেলন ঐতিহাসিক সম্মেলন হবে। সারাদেশে জাগরণের ঢেউ আছে। সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ঢল নামবে।
তিনি বলেন, সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি আমরা। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা জাতির কাছে অঙ্গীকার রেখেছি, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাবো। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আওয়ামী লীগকে আরও সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করে গড়ে তুলতে চাই আমরা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আগামী সরকার পরিচালনার জন্য আমরা প্রস্তুত, ঐক্যবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল, এটাই আমাদের বার্তা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম প্রমুখ।