তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি -ঃ-রা জশাহীর তানোরে শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে শিক্ষা নিয়ে জম্পেশ বাণিজ্য ও রীতিমত খেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে অভিভাবক মহলে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, শিক্ষক সমিতির বিধি-বহির্ভুতভাবে চাপিয়ে দেওয়া প্রশ্নপত্রে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এঘটনায় শিক্ষার্থীরা হতবাক অভিভাবক মহল ক্ষুব্ধ।এদিকে সব স্কুল একই সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ না করায় থাকছে না গোপনীয়তা। এতে ভবিষ্যত প্রজন্ম মেধাশূণ্য হচ্ছে, পাবলিক পরীক্ষায় ঘটছে ফল বিপর্যয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। অভিভাবক মহল এটাকে শিক্ষা নিয়ে খেলা ও জম্পেশ বাণিজ্য বলে অবহিত করেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, সমিতি কতিপয় প্রকাশনীর কাছে থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে, তাদের পুস্তক বাণিজ্য নির্বিঘ্ন করতে তাদের পরামর্শে নিজেরা প্রশ্নপত্র তৈরী করছেন।
জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর থেকে
উপজেলার মাধ্যমিক স্কুল-মাদরাসায় একযোগে শুরু হয়েছ বার্ষিক পরীক্ষা। নীতিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজ নিজ প্রশ্নপত্র তৈরি করে পরীক্ষা নেবার কথা। কিন্তু শিক্ষক সমিতি সেটা হতে দেয়নি। তারা তাদের ইচ্ছেমত প্রশ্নপত্র চাপিয়ে দিয়েছেন। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম বিপাকে তারা সৃজনশীল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সমিতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন।কিন্ত্ত পাবলিক পরীক্ষায় সৃজনশীল পশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হচ্ছেন, এতে ফল বিপর্যয় ঘটছে।
উপজেলায় জেলা শিক্ষক সমিতি ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির পৃথক প্রশ্নপত্রে নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক
শিক্ষক জানান,উপজেলায় মাধ্যমিক নিম্ম মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে ৬১টি। এর মধ্যে সরনজাই, মোহর, তালন্দ,, তানোর বালিক ও কলমা বালিকা বিদ্যালয় জেলা শিক্ষক সমিতির অন্তর্ভুক্ত এবং বাকি স্কুলগুলো উপজেলা শিক্ষক সমিতির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফলে এক উপজেলায় পৃথক প্রশ্নপত্রে নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা। অন্যদিকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৬ষ্ঠ ও অষ্ঠম শ্রেণী এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সপ্তম ও নবম শ্রেণীর পরীক্ষার সময় সুচি নির্ধারণ করা হয়েছে।কিন্ত্ত অনেক স্কুল দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে পরীক্ষা নেয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। এতে প্রশ্নপত্রের কোন গোপনীয়তা থাকছে না। এবিষয়ে
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক
সমিতির সভাপতি ও চাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমান জানান, পান্ডুলিপি অনুযায়ী প্রশ্নপত্র করা হয়েছে। নিজ নিজ স্কুলের প্রশ্নপত্র নিজেদের তৈরির নিয়ম রয়েছে তাহলে সমিতির প্রশ্নপত্রে কিভাবে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন সারা দেশে এভাবেই চলে। এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয় অত্যন্ত জটিল, এসব বিষয়ে আমাকে আর ফোন দিবেন না, যা বলার সমিতির সভাপতি জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে জেনে নিবেন। পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করতে হবে। কিন্তু উপায় নেই সমিতির কাছে সবাই জিম্মি।এবিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, সমিতির প্রশ্নপত্র তৈরির কোন সুযোগ নেই, যদিও এসব প্রশ্নপত্র নিয়ে আমাদের করনীয় কিছু নেই। এবিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অঞ্চল রাজশাহী পরিচালক প্রফেসর ডা: কামাল হোসেনের দপ্তরে টেলিফোনে কল করে প্রশ্নপত্র বিষয়ে অবহিত করা হলে একজন রিসিভ করে জানান, স্যার নাই, প্রশ্নপত্র বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ভালো বলতে পারবেন। এবিষয়ে
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, এসব নিয়ে বিকট আকারে খবর প্রকাশ করেন, তাহলে আমি তাদের ধরতে পারবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, নীতিমালা দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।