মইনুল ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি -ঃ-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অভিভাবক সেজে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে স্বর্ণের এক জোড়া কানের দুল ‘লুটে’ নিয়েছে প্রতারক নারী। বুধবার সকালে পৌর এলাকার তারাগন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
শিশু শিক্ষার্থীকে কৌশলে বিদ্যালয় থেকে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক শুঁকিয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়। তবে ওই শিশু শিক্ষার্থী কিছু সময় অবচেতন থাকলেও পরে ঠিক হয়ে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে অভিভাবক ডেকে শিক্ষার্থীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার শিকার শিশু শিক্ষার্থী সুবর্ণা ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ও মৃত শাহীন মিয়ার মেয়ে। তবে প্রতারণা করা ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ১০টা থেকেই বোরখা ও হিজাব পড়া এক নারী বিদ্যালয়ে আসেন। নিজেকে ওই বিদ্যালয়ের পাশর্^বর্তী ব্রিলিয়ান্ট কিন্ডার গার্টেনের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী মীমের মা বলে পরিচয় দেয়। ওই নারী অন্যান্য অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিবেশ অনেক সুন্দর উল্লেখ করে নিজের মেয়ে এখানে নিয়ে আসবেন বলে জানান।
এদিকে বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে আসা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুবর্ণা প্রাত্যহিক সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) শুরুর আগে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিলো। ওই নারী এক পর্যায়ে সুবর্ণার কাছে তার পরিবার সম্পর্কে খোঁজ নেয়। কথা বলতে বলতে সুবর্ণাকে নিয়ে বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে পড়েন ওই নারী।
সুবর্ণা জানায়, ‘ওই মহিলার আমাকে ডেকে বিদ্যালয় থেকে বের করে নেওয়ার পর কি হয়েছে আমি বলতে পারি না। কিছুক্ষণ পরে আমি ক্লাশে চলে আসি। একটু পর বুঝতে পারি আমার কানের দুল নেই। এর আমি শিক্ষকদেরকে জানাই।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার ক্রাইম লেটার কে বলেন, ‘ওই নারী এমনটা ঘটাবেন সেটা কোনোভাবেই টের পাইনি। শিশুর শিক্ষার্থী ক্লাশে এসে কান্না শুরু করলে বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি। তখন সে জানায় যে পড়নে থাকা তার কানের দুল নেই। পরে তার অভিভাবককে ডেকে এনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। বাড়ির সামনে থাকা সিসি টিভি ক্যামেরা দেখে ওই নারীর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তবে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়নি।’