স্টাফ রিপোর্টার -ঃ- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশ যেন কোনোভাবেই স্বাধীন না হয় সেজন্য স্বাধীনতা বিরোধী চক্র পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে সাহায্য করতে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। প্রথমত ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠিত হয়। ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট সদস্য নিয়ে “ পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যাণ কাউন্সিল” নামে নাম করণ করা হয়। এ কাউন্সিলের প্রধান হন ফরিদ আহমদ এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন পি.ডি.পি নেতা নূরুজ্জামান। সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মওলানা আবদুল মান্নান, জুলমত আলী খান, গোলাম আযম, মাহমুদ আলী, ইউসুফ আলী চৌধুরী (মোহন মিয়া), সৈয়দ আজিজুল হক (নান্না মিয়া), পীর মোহসেন উদ্দিন (দুদু মিয়া), রাজা ত্রিদিব রায়, এ.এস.এম সোলায়মান।
পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে সারা দেশে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। তাতে চট্রগ্রাম বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার মোঘল মিয়া আর সেক্রেটারী নোয়াখালী জেলার মুনীর। এ দুই জনের নেতৃত্বে গড়ে উঠে বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়ন কমিটি। সমাজের প্রভাবশালী স্বাধীনতা বিরোধী লোকদের নিয়ে এসব কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্নভাবে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করাই ছিল তাদের প্রধান কাজ। এক্ইভাবে গড়ে উঠে তৎকালীন লাকসাম থানার আওতাধীন নাঙ্গলকোট ইউনিয়ন কমিটি ( বর্তমান নাঙ্গলকোট উপজেলা সদর)। আর এ ইউনিয়ন কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ছিল হাজী আকবর আলী , পিতা-মৃত তোরাব আলী। যুদ্ধকালীন সময়ে হাজী আকবর আলী’র নেতৃত্বে অত্যাচার, রাহাজানি, হত্যা ধর্ষণ, নীরিহ মানুষ ও হিন্দুদের জমি দখল সহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার কলিমুল্লাহকেও হত্যা করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক-বাহিনীর আত্মসমর্পণের সঙ্গে সঙ্গে শান্তি কমিটির বিলুপ্তি ঘটলে ১৯৭২ সালে কোলাবরেটরস স্পোশাল ট্রাই: মামলা হয় । যাহার নং- ১৭৭/৭২,জিআর- ২১৩/৭২, লাকসাম থানার মামলা নং -১৮,তাং-১৭/০২/৭২, ধারা-৩৬৪/৩০২,১০৯,১১৪/৩৮ দ: বি: তৎসহ আর্টিক্যাল ১১(এ) (ব) অব প্রেসিডেন্ট অর্ডার নং৮/৭২, উক্ত মামলায় প্রধান আসামী নাঙ্গলকোট শান্তি কমিটির প্রভাবশালী সদস্য হাজী আকবর আলী, পিতা-মৃত তোরাব আলী, সাং-নাঙ্গলকোট । তার সাথে আরো যারা আসামী হয়েছেন তারা হলেন, আঃ কাদির,পিতা-মৃত ইউসুব আলী, আঃ মান্নান, পিতা- বাদশা মিয়া, আ: মান্নান,পিতা-আঃ কাদের, দেলোয়ার হোসেন,পিতা-মৃত রৌশন আলী, সর্ব সাং- হেছাখাল, মোঃ বজির উল্লা, পিতা-মৃত আজগর আলী, সাং-দৌলতপুর,সিরাজুল ইসরাম মাষ্টার,পিতা-মৃত হাসান আলী, সাং-হরিপুর ও শামসুল হক, সর্ব থানা- লাকসাম (বর্তমান নাঙ্গলকোট) কুমিল্লা । সেই মামলায় লাকসাম থানা পুলিশ হাজী আকবর আলীকে গ্রেফতার করে কোমরে রশি ও হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু’র সাধারণ ক্ষমায় এ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী শান্তি কমিটি সদস্য মুক্তি লাভ করে।
স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচন পূর্ববতী সময়ে নির্বাচনী ইশতেহার ছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে সরকার গঠন হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে। যেমন অঙ্গীকার তেমন কাজ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন দাবী উঠছে রাজাকার আলবদর ও শান্তি কমিটির সেই সব যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের বিচারের এবং যারা মৃত্যূ বরণ করেছে তাদের মরণোত্তর বিচারের। এ নিয়ে নাঙ্গলকোটের বিভিন্ন সভা সেমিনারে আলোচনা সমালোচনা চলছে । সম্প্রতি আবুল কাশেম হৃদয় কর্তৃক প্রকাশিত যুদ্ধাপরাধ ( কুমিল্লা, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, চাঁদপুর) দলিলপত্র “ অপারেশন কিল এন্ড বার্ণ” বইয়ে নাঙ্গলকোটের হাজী আকবর আলী’র নাম স্পষ্টাক্ষরে। যুদ্ধাপরাধী শান্তি কমিটির এ প্রভাবশালী সদস্যের নাম নিয়ে সাধারণ মানুষের জানার অনেক কৌতূহল, কে তিনি যুদ্ধাপরাধী ও শান্তি কমিটির সদস্য এ ”হাজী আকবর আলী” ?
আমাদের অনুসন্ধান টীম দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে জানতে পারেন, তিনি বর্তমান নাঙ্গলকোট উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ, লীগ নেতা সামসুদ্দিন কালু’র পিতা ! যুদ্ধাপরাধীর সন্তান কালু আওয়ামী লীগের কাঁধে চড়ে অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন ! ১৯৮১ সালে কোনোভাবে এসএসসি’র গন্ডি পেরিয়ে পড়ালেখার যবনিকা টেনে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি’র রাজনীতি শুরু করেই সামসুদ্দিন কালু নাঙ্গলকোট উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এরশাদের পতনের দাবীতে ১৯৮৭ সালে ২৭ অক্টোবর উপজেলা ঘেরাও আন্দোলনে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে নাঙ্গলকোটের মৌকরা্ ইউনিয়নের পৌঁছির গ্রামের যুবলীগ নেতা হামিদ শাহাদাত বরণ করেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, আজকের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু’র সুযোগ্য কন্যা মানবতার মা জননেত্রী শেখ চাসিনা শহীদ হামিদের শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে হামিদের পৌঁছির গ্রামে আসেন । তখন থেকে ২৭ অক্টোবর নাঙ্গলকোটে হামিদ হত্যা দিবস পালন হয়ে আসছে। আর সেদিন জাতীয় পার্টির মিছিলে পুলিশের সারিতে ছিলো আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আজকের দিনের আ, লীগে প্রভাব খাটানো নেতা সামসুদ্দিন কালু ! তার বাবা যুদ্ধাপরাধী ও শান্তি কমিটির সদস্য ছিল এটা নতুন প্রজন্ম সহ অনেকেই জানতেন না ।
এরশাদের পতনের পর বিএনপি’তে ডু মারতে ছেয়েছিলো, সুবিধা করতে পারেনি। ফলে জাতীয় পার্টিতেই রয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এ কে এম মাঈন উদ্দিন ভূইয়া ওরফে মমিন মিয়ার পক্ষে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে কালু আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার পথ খুঁজতে থাকে। তৎসময় আ,লীগ মনোনীত স্থানীয় সাংসদ জয়নাল আবেদিন ভূঁইয়ার আশেপাশের লোকদের সাথে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেই পথের দেখা হিসেবে পেয়ে যায় ঢাকায় রুচিতা মদের বারের মালিক ও ঘেরাও আন্দোলনের শাহাদাৎ বরণকারী মরহুম হামিদের গ্রামের (বর্তমান কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য) আবু বক্কর সিদ্দিকের। তার হাত ধরে জয়নাল আবেদিন ভূঁইয়াকে ম্যানেজ করে ১৯৯৭ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেয়। শহীদ হামিদের রক্তে রঞ্জিত নাঙ্গলকোটের রাজপথ পা দিয়ে মাড়ানো লোকটিকে আওয়ামী লীগে নিতে অনেক ত্যাগীরা বাধা দিয়েছিল কিন্তু ঠেকাতে পারেনি। নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের কাঁধে চড়েই দলের দোহাইয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন । ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নাঙ্গলকোট উপজেলা সদর পৌরসভা হয়। এতে নাঙ্গলকোট ইউনিয়ন ভেঙ্গে একটি পৌরসভা ও দুইটি ইউনিয়ন গঠিত হয়। যাহা নাঙ্গলকোট পৌরসভা আর ইউনিয়ন হেসাখাল ও মক্রবপুর। আর পৌরসভার প্রশাসক নিয়োগ পান তৎসময়ের উপজেলা বিএনপি’র সেক্রেটারী, নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ, বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য, সদ্য সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও এর আগের কমিটির আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার সাথে সাথে পুরস্কারস্বরুপ যুগ্ম আহবায়ক নূরুল্লা মজুমদার । আর দুই ইউপি’র চলমান দায়িত্ব পালন করে চলেছেন চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন কালু। প্রশাসক নূরুল্লা মজুমদার ও চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন কালু দিনের বেলায় ভিন্ন দল হলেও রাতের বেলায় একই সুতোয় গাঁথা। সুতোর কারণে চেয়ারম্যান জানতে পারল দুই ইউপিতে’ও প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তাই চেয়ারম্যানী ধরে রাখতে গন্তব্যে পৌঁছতে সেই সুতোর উপর দিয়ে হাঁটতে শুরু করেছিলেন ! গ্রীন সিগন্যাল না পাওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছার আগেই সুতো ছিঁড়ে মাটিতে লেটিয়ে পড়েন । কারণ, বিএনপি’র তৎকালীন সাংসদ আবদুল গফুর ভূঁইয়া দল বদলকারী সুযোগ সন্ধানীদের সুযোগ দিতেন না। ফলে বিএনপিতে যোগ দেয়া হলোনা এবং চেয়ারম্যানীও ধরে রাখতে পারলো না।
আওয়ামী লীগই একমাত্র ভরসা এই পরিকল্পনা মাথায় এনে ২০০৫ সালে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গঠনতন্ত্র বিরোধী লালমাই সম্মেলন নামক সম্মেলনে সেক্রেটারী পদে প্রার্থী হয়ে কালো টাকার জোরে সেক্রেটারী পদ ভাগিয়ে নেন । তখনকার এই সম্মেলন নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে। সে সম্মেলনে প্রকৃত আওয়ামী লীগের অনেকেই কাউন্সিলর হতে পারেন নি। আবার যে কেউ সভাপতি ও সেক্রেটারি পদে প্রার্থী হবার অবাধ সুযোগ তৈরি হওয়ার সুযোগে আওয়ামী লীগের কোথাও কোনো সদস্য পদ ও নুন্যতম শর্ত পূরণ ছাড়াই সভাপতি পদে মোস্তাফিজুর রহমান লিটন ও সেক্রেটারী পদে সামসুদ্দিন কালু প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পান। সেই সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়কের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল ( লোটাস কামাল ) । সামসুদ্দিন কালু সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়ে পদের দোহাইতে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন আদায় করে নেন। আবার মেয়র রানিং থাকা অবস্থায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদের মনোনয়নও ভাগিয়ে নেন। একই কৌশলে ২য় দফায়ও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পুরো সময়ে দলীয় পদ ও জনপ্রতিনিধির আসনে বসে ক্ষমতার হালুয়া রুটি এককভাবে হাতিয়ে নিয়ে আজকে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন । ১০একর জায়গা জুড়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টি নন্দন আলিশান বাড়ী নির্মাণ করেছে। জানা যাচ্ছে, সরকারী এডিবি’র টাকা ও পৌরসভার বরাদ্দের টাকায় বাড়ীর প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে। বাড়ীর চারদিকের গার্ড ওয়াল ও ৭৫ লাখ টাকায় ব্যয়ে বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা এবং পৌরসভার টেন্ডারের ১২৩টি লাইট পোস্ট বাড়ীর চারদিক আলোকসজ্জায় সজ্জিত । সরকারি টাকা আত্মসাতের পাশপাশি প্রতারনা করেও কোটি কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জামায়াত নেতাদের সাথে সখ্যতা রেখে তাদের নাঙ্গলকোটে রাজনীতির সুযোগ দেয়ার কথা বলে হাওলাত স্বরুপ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ অহরহ। নাঙ্গলকোটে মানুষের মুখে মুখে শুনা যাচ্ছে, ঋন খেলাপি বিসমিল্লাহ গ্রুপের মালিক শাহজাহান বাবলু থেকে ৫ কোটি ধার হিসেবে আত্মসাত করেছে। গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ১৪৩জন থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার খবরও মানুষের মুখে মুখে। নাঙ্গলকোট বাজারের উপর সরকারি সম্পত্তি জবর দখল করে একটি বিলাস বহুল ভবন নির্মাণ করে যমুনা ব্যাংকের নিকট ভাড়া দিয়েছে । তার বাড়ী সংলগ্ন নাঙ্গলকোট আল্ট্রা মডার্ণ নামক হাসপাতালের মালিকানা হাতিয়ে নেয় বিনা পুঁজিতে। বাঙ্গড্ডা ইউপি’র চেয়ারম্যান শাহজাহানকে ম্যানেজ করে বাঙ্গড্ডা রাস্তার বড় বড় গাছগুলো নাম মাত্র মূল্যে হাতিয়ে নেয় । একইভাবে ধাতিশ্বর গ্রামের রাস্তার গাছগুলোও তিনি ক্ষমতার জোরে হাতিয়ে নেন। এসব গাছের কাঠ দিয়ে দৃষ্টি নন্দন বাড়ীর দরজা জানালার চৌকাঠ সহ নানা কাজ করার অভিযোগ অহরহ। কোদালিয়া নিবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী তাপস কুমার ভৌমিক পিন্টু তার মালিকাধীন মার্কেটর মেডিসিন ব্যবসায়ী । ব্যবসায়ী পিন্টু’র ব্রাশ নামক একটা এনজিও ছিল । পিন্টু এনজিও দেখিয়ে এলাকার অনেক লোক থেকে টাকা সংগ্রহ করেন। কালু খবর পেয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে পিন্টু’র আদায়কৃত টাকা গুলো হাতিয়ে নিয়ে পিন্টুকে এলাকা ছাড়া করে। পাওনাদারের যন্ত্রনায় পিন্টু এখন পলাতক । তিনি ৩ (তিন )বছর পৌর মেয়র থাকাকালে পৌরসভার সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড তার আত্মীয় স্বজন দিয়েই সমাপ্ত করে তিন বছরে প্রায় ৩০ কোটি হাতিয়েছেন। নাঙ্গলকোটের সকল সিএনজি স্ট্যান্ড, খাদ্য গুদাম তার একক নিয়ন্ত্রনে । সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন বিশ হাজার করে চাঁদা আদায় করে এবং খাদ্য গুদাম থেকে বছরে কয়েক লাখ টাকা পায় । উল্লেখ্য, টিআর এবং কাবিখার গম চাউলের দাম বাজার দরের অর্ধেক দাম দিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিদায় করে । এছাড়া অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে তিনি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নাঙ্গলকোটের সকল টেন্ডার তার নিয়ন্ত্রণে, তিনি তার লোকদের ঠিকাদারি লাইসেন্সে কাজ উঠিয়ে নিজেই ঠিকাদারি করেন। গত পাঁচ বছরে পৌর মেয়রকে চাপ প্রয়োগ করে ২১ কোটি টাকার কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন। বাস্তবে কাজ না করে কাগজে দেখিয়ে বিলগুলো তুলে নিয়েছেন। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এডিবি’র টেন্ডার, ত্রাণ অফিসের টেন্ডার অন্য কারো অংশগ্রহণ করার সুযোগ নাই। সবই তার কব্জায়। স্থানীয় সাংসদ অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও মন্ত্রী’র মেয়ে নাফিজা কামালের ক্লাব ভিক্টোরিয়ান্সের নাম বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগও অহরহ।
ক্ষমতার একক আধিপত্য বিস্তার করে শত শত কোটি টাকার মালিক নাঙ্গলকোটের আলিশান বাড়ী, দেশে বিদেশেও প্রচুর ফ্ল্যাট করার খবর রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা ও রাজধানীর সেগুন বাগিচা, বাংলামটর এলাকায় দামী দামী ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া আমেরিকা ও ডুবাইতেও একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে। এলাকার নতুন কোন পয়সাওয়ালা লোকের খবর পেলে তাঁকে বাড়ীতে দাওয়াত দিয়ে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়ে ৩০ আইটেমের মাছ রান্না করে অ্যাপ্যায়নে অ্যাপ্যায়িত করে তাঁকে টোপে পেলে লাখ থেকে কোটি টাকাও হাতিয়ে নিবে । বক্সগঞ্জ এলাকার আজিয়ারা গ্রামের বাহরাইন প্রবাসীকে বাড়িতে দাওয়াত করে এরকম আয়োজন করে তার থেকেও অনেক টাকা হাতিয়েছেন। বাহরাইন প্রবাসীর বাহরাইনে হোটেল ব্যবসা {?} সহ নানা রকম ব্যবসা রয়েছে। তিনি মাঝে মাঝে বিনোদনের জন্য সেখানে যেতে হয় । সেজন্যই খাতির একটু বেশী । এছাড়া বাহরাইন প্রবাসীর চেয়ারম্যান নির্বাচন করার একটু শখ জন্মেছে । এরকম বরশি ফেলে টোপ গিলাতে চেয়েছিলেন সবুজ নামের এক প্রতারক ব্যবসায়ীকে । সেই প্রতারক অনেক ধুরন্ধর । তাই শিকার মিলাতে পারেনি।
যুদ্ধাপরাধী ও শান্তি কমিটির সদস্যের সন্তান হয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠনের কাঁধে চড়ে একটানা ১২বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী, পদের দোহাইতে একদফা মেয়র, দুই দফা নৌকা প্রতীকের মনোনীত উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ও নতুন প্রজন্মের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে । একজন যুদ্ধাপরাধীর ছেলে হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যখন পরিকোট বধ্য ভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যেভাবে গল্প বলে (?) মনে হয় তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ! তার বক্তৃতা শুনে তখন জীবন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের গা শির শির আর ঘীন ঘীন করে ! এছাড়া শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মাও কষ্ট পায় । তাই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার কষ্ট দূর করতে এবং নাঙ্গলকোটকে যুদ্ধাপরাধী কলঙ্কমুক্ত করতে এলাকার জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের ও নতুন প্রজন্মের একটাই দাবী এই চিহিৃত যুদ্ধাপরাধী ও শান্তি কমিটির সন্তানের কাছ থেকে আওয়ামী লীগকে মুক্ত করা চাই ।