মোঃ সামছু উদ্দিন লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধি -ঃ বললেন হাসপাতালে যাচ্ছেন, ব্যাগে মিলল শেরওয়ানি-পাগড়ি। নোয়াখালীতে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংস্থার লোকজন। এর পরও মানুষ নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন।
অনেকেরই ঘর থেকে বের হওয়ার যথার্থ কারণ না থাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে বলছেন মিথ্যা কথা। এরকমই একজনকে জিজ্ঞাসাবাদে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বললেও তার ব্যাগ তল্লাশি করে পাওয়া যায় শেরওয়ানি ও পাগড়ি।
লকডাউন বাস্তবায়নের খণ্ড ঘটনা নিয়ে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান রনি। সেখানেই তিনি এমন ঘটনার কথা তুলে ধরেন।
নিজের ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে আসাদুজ্জামান রনি লেখেন, ‘দুই ব্যক্তি অটোরিকশাযোগে কোথাও যাচ্ছিল, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিগন্যাল দেয়া হলে অটোরিকশা থামল। জিজ্ঞেস করলাম, এ সময় কোথায় যাচ্ছেন? বলল, হাসপাতালে। সাথে থাকা ব্যাগ দেখে একটু খটকা লাগায় বললাম, ব্যাগটা একটু দেখব। বাধ্য হয়ে লোকটি ব্যাগটা এগিয়ে দিল। তাতে ছিল বিয়ের শেরওয়ানি আর পাগড়ি। তারপর জিজ্ঞেস করলাম, হাসপাতালে কি আজকাল বিয়েও হয়? লোকটি সরল স্বীকারোক্তি দিল, মিথ্যা বলেছি।’
অন্য এক ঘটনায় তিনি লিখেছেন, ‘অটোরিকশায় তিন সদস্যের একটি পরিবার যাচ্ছিল, স্বামী, স্ত্রী ও তাদের আনুমানিক তিন বছরের মেয়ে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিগন্যাল দেয়া হলে দেখলাম, ছোট্ট মেয়েটি তার বাবার নাক চেপে ধরেছে। খেয়াল করলাম, তার বাবা মাস্ক পড়েননি। এতটুকু একটা মেয়ের সচেতনতা ও বাবার প্রতি ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম!’
স্ট্যাটাসের শেষে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা কয়েকটা দিন চেষ্টা করি, খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে। আশা করি, দুঃসময় খুব তাড়াতাড়ি কেটে যাবে।’
পরে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান রনি বলেন, ‘ঘটনা দুটি স্মৃতি হিসেবে রাখতে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ফেসবুকে পোস্ট করেছি।’ এছাড়া ওই দুই ঘটনায় সরল স্বীকারোক্তি দেয়ায় কারোরই জরিমানা না করে সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, করোনাভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে জেলার প্রতিটি প্রান্তে এ সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।